আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতির বাণী

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২৯তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২২তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২৯তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২২তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০২০ উদ্যাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।

২৯তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে সম্পৃক্ত করি, নতুনভাবে টেকসই বিশ্ব গড়ি’ (Building Back Better: toward a disability-inclusive, accessible and sustainable post COVID-19 world), যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে আমি মনে করি।

সরকার ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩; নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন, ২০১৩; বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন, ২০১৮ এবং প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা, ২০১৯ প্রণয়ন করেছে। এ সকল আইন ও বিধি-বিধানের আলোকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মৌলিক চাহিদাপূরণ, ক্ষমতায়ন এবং দেশের অন্যান্য জনগণের ন্যায় সমঅধিকার নিশ্চিতকরণে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করছে। ফলে এদেশের প্রতিবন্ধী জনগণ উপযুক্ত শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান/স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর বিশেষ চাহিদাপূরণে এবং তাঁদের অধিকার রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে আন্তরিক হতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী আমাদের সমাজেরই অংশ। উপযুক্ত সেবা, চিকিৎসা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও সহায়ক উপকরণ পেলে তারাও সামাজের বিভিন্নক্ষেত্রে অবদান রাখতে সক্ষম। দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মেধা ও সৃজনশীলতাকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে।

কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধে সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে আমাদের দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্তের হার তুলনামূলকভাবে কম। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

আমি ২৯তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২২তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসের সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩ ডিসেম্বর ২৯তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২২তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০২০ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“আজ ২৯তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২২তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০২০ পালন হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। আমি এদেশের সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তাঁদের পরিবার এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের জীবনমান উন্নয়নে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
এবারের আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে সম্পৃক্ত করি, নতুনভাবে টেকসই বিশ্ব গড়ি’ (Building Back Better: toward a disability- inclusive, accessible and sustainable post COVID-19 world) অত্যন্ত সময়োপযোগী ও যথোপযুক্ত হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ রাষ্ট্রের সকল মানুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করেছেন। সে লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের চারমেয়াদের শাসনামলে এদেশের প্রতিবন্ধী জনগণের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য বিভিন্ন আইন/বিধি/নীতিমালা/কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। তন্মধ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩; নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন, ২০১৩; বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন, ২০১৯; প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা, ২০১৯ এবং প্রতিবন্ধী বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা, ২০১৯ প্রণয়ন অন্যতম।
প্রতিবন্ধীরা জাতির বোঝা নয়, সম্পদ। সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নানাবিধ কাজের সাথে সম্পৃক্ত করে তাদের জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধশীল জাতি বিনির্মাণে সরকার বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্যে সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমঅধিকার নিশ্চিতকরণ, ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান, প্রতিবন্ধীবান্ধব গণস্থাপনা নির্মাণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বহুবিধ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। প্রতিবন্ধী ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি, সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রম এবং প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে।
প্রতিবন্ধী মানুষের সার্বিক উন্নয়নে আমি সরকারের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের জনগণ, সংশ্লিষ্ট সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সকল আর্থসামাজিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে হবে। সকলের সম্মিলিত কর্মপ্রয়াসে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হবো-ইনশাআল্লাহ।
আমি ২৯তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২২তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০২০ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

তথ্যবিবরণী-পিআইডি।