‘আমি দুঃখিত যে তোমরা এখানেও নিরাপদ নও’

ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদের এক শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীর এলোপাতাড়ি গুলিতে ৪৯ জন মুসল্লি নিহত হওয়ার পর শান্তির দেশ ও আতিথেয়তার জন্য বিখ্যাত নিউজিল্যান্ডে ব্যাপক দুঃখ ও সমবেদনা জানানো হচ্ছে।

সাধারণত বিভিন্ন দেশে নিপীড়িত মানুষের আশ্রয় ও শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর মধ্য দিয়ে গর্ব করে আসছে দেশটি। অথচ সেখানেই এবার এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।-খবর এএফপির

হামলার পরের দিনেও লোকজন দোকানপাট বন্ধ রেখে ঘরের ভেতর অবস্থান করছেন। আল নুর মসজিদের কাছে একটি অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুলের তোড়া দিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।

ফুলের সঙ্গে কেউ কেউ এ অবিশ্বাস্য ঘটনায় শোক জানিয়ে হাতে লেখা চিঠিও রেখে যাচ্ছেন। চুমুর ছবি সম্বলিত একটি চিঠিতে লেখা, আমি খুবই দুঃখিত যে তোমরা এখানেও নিরাপদ নও। তোমাদের হারিয়ে আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডান শনিবার বলেন, এই শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীকে কোনো পর্যবেক্ষণে রাখা হয়নি। এর আগে তার কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই। তবে তার কাছে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল।

ক্রাইস্টচার্চের শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীদের হামলার সময় মসজিদের পেশ ইমাম ইব্রাহীম হালিম বলেছেন, তিনি এখনো নিউজিল্যান্ডকে ভালোবাসেন।

সন্ত্রাসীরা কখনোই আমাদের আত্মবিশ্বাসে ঘা দিতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন লিনউডের এই ইমাম।

শনিবার তিনি বলেন, মুসলিম সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে এই হামলার ঘটনায় তাদের বিচলিত করতে পারবে না।

এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ার আগে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদটি ছিল শান্ত, নিস্তরঙ্গ ও নীরব।

শুক্রবার রমজান নামে এক মুসল্লি সাংবাদিকদের বলেন, নামাজের আগে যখন খুতবা শুরু হয়, তখন একটি পিনপতনের শব্দও শোনা যায়নি।

বেলা দেড়টার দিকে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু হলে এ পর্যন্ত ৪৯ জন মুসল্লি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, মসজিদের মূল কক্ষ থেকে গুলি শুরু হয়েছে। আমি ছিলাম পাশের কক্ষে। কাজেই কে গুলি করছেন, তা আমি দেখিনি। কিন্তু কিছু লোক ওই কক্ষ থেকে পালিয়ে আমাদের এদিকে আসতে শুরু করেন।

‘কিছু কিছু লোকের শরীরে আমি রক্ত দেখতে পেয়েছি। কেউ কেউ নিস্তেজ হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন।’

তখনই আমার কাছে মনে হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটছে।