আমি পরিস্থিতির শিকার, অভিমানে আত্নহত্যা করতে ইচ্ছা করে : দ্বীন ইসলাম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন শিক্ষক দ্বীন ইসলাম। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে দ্বীন ইসলামকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে তিনি উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় ফিরতে চান।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক, সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদনও করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে জামিন পাওয়া মানে তাকে নির্দোষ বলা যাচ্ছে না, এটা বিচারধীন বিষয়। এখানে দেখতে হবে তার কতটা স্কোপ আছে ফিরে আসার। প্রশাসন অপেক্ষা করছে একটি তদন্ত রিপোর্টের, তারপর নেবে সিদ্ধান্ত।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি জানান, তিনি দ্রুতই ক্লাসে ফিরতে চান । বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে আবেদন করেছেন। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে তদন্ত রিপোর্টের উপর। তবে কারও কারও কাছ থেকে তিনি জানতে পেরেছেন তার পূনঃ যোগদান তদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনার মাধ্যমে সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপিত হবে। তার দাবি যেখানে তাকে বহিষ্কারের জন্য কোনো সিন্ডিকেট সভার দরকার হয়নি সেখানে পূনঃ যোগদানের জন্য তা কেন? তিনি আরোও জানান, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। দিন দিন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ সমস্যা থেকে দ্রুত রেহাই না পেলে হয়তো তাকেও আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘দ্বীন ইসলামকে পুনরায় শিক্ষকতায় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিবে প্রশাসন। প্রশাসন অব্যাহতি উঠিয়ে নিলে সে (দ্বীন ইসলাম) আবার ক্লাস নিতে পারবে।’ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্য ও আইন অনুষদের ডিন এবং চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘জামিন পাওয়া মানে (দ্বীন ইসলাম) কে নির্দোষ বলা যাচ্ছে না। জামিন পাওয়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কোনো একটি তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তখন হয়তো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। তাই দ্বীন ইসলামকে শিক্ষকতায় ফিরতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত রিপোর্টের বিষয়ে অধ্যাপক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেছি, তাদের স্বীকারোক্তি নিয়েছি। সে সকল তথ্য পর্যালোচনা করে রিপোর্ট তৈরি করছি। আমরা আশাবাদী খুব অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আইনগত দিক বিচার বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যেহেতু এটা বিচারাধীন বিষয়।”

উলেখ্য যে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও আইন বিভাগের ছাত্র রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে গত ১৭ মার্চ গ্রেপ্তার করেছিলো পুলিশ। দ্বীন ইসলামকে তখন সাময়িক অব্যাহতি দেয় প্রশাসন। গত ৮ মে শিক্ষক দ্বীন ইসলামকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে কুমিল্লা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি দেয়। এখন তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।