আমি যাকে প্রার্থী দেব, ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার জন্য কাজ করতে হবে: নরসিংদীতে প্রধানমন্ত্রী
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন সামনে, যে যত পারেন প্রার্থী হন, কিন্তু আমি যাকে প্রার্থী দেব, নৌকা মার্কা দেব ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার জন্য কাজ করতে হবে। অগ্নিসন্ত্রাসী, খুনীরা যেন আর বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে সরকার হটানো যায় না। তারা (বিএনপি) অবরোধের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে মানুষকে আহত করছে। পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর হামলা করছে। বিএনপির এমন সন্ত্রাসী কর্মকা আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি। আবার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দেবেন কী না? এমন প্রশ্ন করে তিনি সবাইকে হাত তুলে ওয়াদা করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি রোববার বিকালে নরসিংদীর মোসলেহ উদ্দিন ভুঁইয়া স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জনসভায় নরসিংদী জেলায় নবনির্মিত ও সমাপ্ত দশটি উন্নয়ন প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ দশটি প্রকল্পের মধ্যে ৮টি শিক্ষা সংক্রান্ত এবং বাকি দুটি প্রকল্পের একটি স্থানীয় সরকার বিভাগ ও অপরটি বাংলাদেশ কৃষি উন্নযন কর্পোরেশন সংক্রান্ত বলে জানা গেছে।
জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা যখন নৌকায় ভোট দিয়েছেন, নৌকা মার্কা ক্ষমতায় এসেছে। আপনার এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। ১৫ বছর আগে কী অবস্থা ছিল? নৌকা মার্কা যখনই ক্ষমতায় ছিল দেশের উন্নয়ন হয়েছে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, বিশ্বের কাছে আর আমাদের মাথা নত করে চলতে হয় না। আমরা মাথা উঁচু করে চলতে পারি। এছাড়া যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশের মানুষের উন্নয়ন চায়নি।
তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামীলীগ সরকার নরসিংদীতে ৩১৪টি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে, এরমধ্যে ১৯টি বাস্তবায়ন হয়েছে, ১২৩টি এখনও চলমান রয়েছে। একইভাবে সারাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমি দেশে ফিরে আমার পরিবার পাইনি, পেয়েছি সারিসারি লাশ। কিন্তু আমি পেয়েছি বাংলাদেশের জনগণ, আমি পেয়েছি এদেশের মানুষ। আজকে বাংলাদেশের মানুষ ই আমার পরিবার। আমি ঠিক পরিবার হিসেবে নিয়েই আপনাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আজকে আপনারা উন্নয়ন পেয়েছেন। বাংলাদেশের জনগণের জন্য আমি যেকোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত, প্রয়োজনে বাবার মত, মায়ের মত নিজের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী এডভোকেট নূরল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ হাজার ৫ শত কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ ঘোড়াশাল—পলাশ ইউরিয়া সারকারখানা পরিদর্শন করেন। উদ্বোধন শেষে দুপুরে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কিছু মানুষ চায় না আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসুক। আবার অগ্নি সন্ত্রাস শুর হয়েছে, তাদের চেতনা কবে ফিরবে? দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসার দৈন্যতা ভোগে না বঙ্গবন্ধু কন্যা। ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা না দেয়ায় আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। ক্ষমতা নয় আওয়ামীলীগের কাছে দেশের স্বার্থই বড়। সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারও সাথে বৈরিতা নয়। বিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে, বাংলাদেশও এর বাইরে নেই। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। দেশ আর পিছিয়ে যাবে না, অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।
শিল্পমন্ত্রী এডভোকেট নুরল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারল আশরাফ খান দিলীপ। স্বাগত বক্তব্য দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।
কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবার কথা থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই সারকারখানা প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ নির্ধারিত মেয়াদের দুই মাস আগেই শেষ হয়। চলতি মাসেই কারখানাটিতে শুর হয়েছে পরীক্ষামূলক সার উৎপাদন কার্যক্রম। দৈনিক ২৮ শত মেট্রিক টন ও গড়ে বছরে ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে কারখানাটিতে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন