আমের বিপুল সমাহারে জমজমাট কলারোয়ার বেলতলা পাইকারি আমবাজার
সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার প্রবেশদ্বারে মহাসড়কের উভয় পাশে গড়ে উঠেছে এ জনপদের সর্ববৃহৎ আমের বাজার বেলতলা আমবাজার।
সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কিসমত ইলিশপুর ও যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বাগুড়ি (বেলাতলা) এলাকাজুড়ে এ আমবাজারের অবস্থান। ভিন্ন জেলা ও উপজেলার আম ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে মিলেমিশে চালিয়ে যাচ্ছেন এ আমবাজারটি। প্রায় একশর মতো আমের আড়ত রয়েছে এ বাজারে। বছরের এই মৌসুমে এ এলাকা পাইকার ও বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে মুখরিত থাকে।
সরেজমিন এ জমজমাট আমবাজার ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের মানসম্মত আমের বিপুল সমাহার। বাজারে আসা আমের সিংগভাগই হলো গোবিন্দভোগ। এছাড়া রয়েছে রোম্বাই, গোপালভোগ, গোপালখাস, সরিখাস, বৈশাখী, লতা জাতের আম। বেশিরভাগ আমই বেশ পুষ্ট ও পরিপক্ব। সময় হয়নি তবুও দেখা গেল অল্প পরিমাণ হিমসাগর আম বাজারে আসতে শুরু করেছে। সামনে খারাপ আবহওয়ার পূর্বাভাস থাকায় আগাম বাজারে আসতে শুরু করেছে হিমসাগর -এমনটি দাবি এখানকার ব্যবসায়ীদের।
যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের দুই পাশে অবস্থিত আমের আড়তগুলো যেন দৃষ্টিনন্দন আমের এক রাজ্য! বাজারের পাশের গ্রামীণ পাকা সড়কজুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছোট-বড় ট্রাকের সারি। মৌসুমের শুরুতে প্রতিদিনই ৫০ মেট্রিক টনের বেশি আম এই ট্রাকযোগে চলে যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
বেলতলা পাইকারি আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি লোকমান হোসেন বলেন, প্রতিদিন সকাল নয় টা থেকে বাজার শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল চার টার মধ্যে।
আগামী ২২ মে হিমসাগর গাছ থেকে নামানোর কথা থাকলেও এখন তা বাজারে নিয়ে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, অধিকাংশ হিমসাগর আগাম পরিপক্ব হয়ে যাওয়ায় তা বাজারে তোলা হচ্ছে। আমের গুণগত মানকে এ বাজারে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।
আম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর আম কম উৎপন্ন হওয়ায় দামও বেশি। ফলে আম চাষীরা ভালো দাম পেয়ে যথেষ্ট খুশি।
তিনি বলেন, গোবিন্দভোগ মণপ্রতি ১৮শ টাকা থেকে মানভেদে দুই হাজার টাকা, গোপালভোগ-বোম্বাই জাতের দাম ১২শ থেকে ১৬শ টাকায় বেচাবিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বাজারে রাসায়নিকে পাকানো বা অপরিপক্ব আম তোলা যাবে বলে সকল জানিয়ে দেওয়া হয়। এই বাজারে মানসম্মত আমই কেবলমাত্র তোলা যায়।
বাজার ঘুরে কথা হয়, আল্লার দান ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মোক্তারুজ্জামানের সাথে।
তিনি জানান, ছোট-বড় মিলিয়ে বাজারে একশর মতো আমের আড়ত থেকে মৌসুমের শুরুতে প্রতিদিন ৫০ মে. টনের বেশি আম ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকযোগে যায়।
পরে এই পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি হতে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বেলাতলা আমবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, আর দশ/বার দিন পর বাজারে উঠবে সুস্বাদু ন্যাংড়া আম। তারপরে সবশেষে উঠবে আম্রপালি আম। তবে ন্যাংড়া আম বাজারে আসার পর আরও বেশি জমজমাট হবে এই বেলতলা পাইকারি আমবাজার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন