আয়না ঘর, গুম-খুনসহ সমস্ত অপরাধের বিচার এই বাংলায় হবে : এবিএম মোশাররফ হোসেন

দীর্ঘ ১৭ বছর পর আপনাদের সামনে দাড়িয়েছি। এতগুলো বছর পরে স্বাধীনভাবে আপনাদের সামনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। এই দীর্ঘ সময় দেশটাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল স্বৈরাচার হাসিনা সরকার। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ভয়ে পালিয়ে গেছে খুনি হাসিনা। আর তাকে অবৈধভাবে টিকিয়ে রেখেছিল সম্প্রতি আমাদের পানিতে ডুবিয়ে দেয়া দেশ ভারত। স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে আটকে রেখেছে। আমি নিজেও সাড়ে ৬ মাস অবৈধ সরকারের কারাগারে ছিলাম। আর যারা হাসিনা সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে তাদেরকে দীর্ঘদিন আয়না ঘরে আটকে রেখেছে। আজ জনগণের কাছে তাদের দুঃশাসনের চিত্র স্পষ্ট হয়ে গেছে। আয়না ঘর, গুম খুন সহ সমস্ত অপরাধের বিচার এই বাংলায় হবে।

রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫ টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন মাঠের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন। এ সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেন, কোন বিচার সালিশ বিএনপির নেতা কর্নামীরা করতে পারবেনা। বিএনপির কোন নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পেলে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন আরও বলেছেন, অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান সরকারকে আমরা সহযোগিতা করতে চাই। তবে অনতিবিলম্বে যে সকল দুর্নীতিবাজ লোক আছে তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। যে সকল পুলিশ র্যাব ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অভিযুক্ত তাদের তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা টাকা পাচার করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে ওই টাকা দেশে ফেরত আনতে হবে। বিগত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলের মন্ত্রী এমপি সহ আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীরা আজকে হাজার কোটি টাকার মালিক। এই টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে এই টাকা ফেরত আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা জনগণের বাংলাদেশ চাই। বিগত সরকারের আমলে আমাদের দেশের হাজার হাজার শিক্ষিত বেকারদের চাকরি হয় নি। চাকরি হয়েছে ভারতীয় লোকের। স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে জনগন ভোট দিতে পারে নাই। এমপি মন্ত্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমনকি মেম্বার হতেও ভোট লাগে নাই।

আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আমি বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। তাই অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারকে সুষ্ঠু ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আমরা একটি যৌক্তিক সময় দিতে চাই। তার বক্তব্যের শেষে তিনি জুলাইয়ের আন্দোলন সংগ্রামে যে সকল ছাত্র জনতা শহীদ হয়েছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।

এর আগে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনকে বরণ করতে পটুয়াখালী-৪ সংসদীয় আসনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার জনগণ আনন্দ মিছিল করে কলাপাড়া পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।