আযান ছাড়াই নামাজ আদায় করেন ইথিওপিয়ার বহু মুসলিম!
ইথিওপিয়া উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এই দেশটির একটি পবিত্র শহরের নাম আকসুম। খ্রিস্টান অধ্যুষিত একটি শহর। এই শহরটি দেশটির খ্রিস্টানদের ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান। তাই এই শহরটিতে কোনো মসজিদ নির্মাণ করা হয়নি। আর কাউকে মসজিদ নির্মাণ করতে দেওয়াও হয় না। শুধু তাই নয় অঞ্চলটির মুসলিম বাসিন্দারা উচ্চস্বরে আযান দিতে পারেন না।
আকসুম শহরটিতে কয়েকটি মুসলিম গোষ্ঠী একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর সেই সাথে এই এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব রাখা হয়। কিন্তু এই প্রস্তাব খ্রিস্টান নেতারা প্রত্যাখ্যান করে দেন। তারা জানান, তারা মারা যাবে তবুও ওই এলাকায় কোনো মসজিদ নির্মাণ করতে দেবেন না।
আকসুমের খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতা গডিফা মেহেরা জানান, আকসুম হল আমাদের কাছে মক্কা। তিনি বিশ্বাস করেন, মুসলিমদের পবিত্র স্থানগুলোতে যেমন করে খ্রিস্টানদের কোনো ধর্মীয় স্থাপনা থাকতে পারে না, তেমনি আকসুমে মুসলিমদের কোনো ধর্মীয় স্থাপনা থাকতে পারে না।
মেহেরা আরো জানান, আকসুম হল আমাদের কাছে একটি পবিত্র স্থান। এটি হল আমাদের কাছে আশ্রম।
গডিফা মেহেরা বলেন, আকসুমে যদি কেউ মসজিদ নির্মাণ করতে আসে তাহলে আমরা মারা যাব। আর এটার অনুমতি কখনো দেওয়া হবে না। আমরা যতোদিন বেঁচে থাকবো ততোদিন এটা হতে দেব না।
এই অঞ্চলটিতে ১০ শতাংশ মুসলিম, ৯০ শতাংশ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা বসবাস করেন। আকসুমের মসজিদ নির্মাণ করার জন্য এবং উচ্চস্বরে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার জন্য অঞ্চলটির মুসলিমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ‘জাস্টিক ফর আকসুম মুসলিম’র ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইসলাম ধর্মাবলম্বী আজিজ মোহাম্মাদ আকসুমে বসবাস করেন ২০ বছর ধরে। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক। তিনি বলেন, ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের আকাশের নিচে নামাজ আদায় করতে হয়। কারণ এই অঞ্চলটিতে কোনো মসজিদ নেই।
আব্দুল মোহাম্মাদ আলি জানান, শুক্রবারে আমরা যদি উচ্চস্বরে প্রার্থনা করি তাহলে খ্রিস্টানরা আমাদেরকে বলে, আমরা তাদের পবিত্র স্থানকে অপমান করছি।
এই অঞ্চলটিতে খ্রিস্টান ও মুসলিমরা এক সঙ্গে বসবাস করেন। সবচেয়ে বেশি বসবাস করে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা। খ্রিস্টানরা মুসলমানদের প্রার্থনা করতে নিষেধ করে না। কিন্তু উচ্চস্বরে প্রার্থনা কিংবা আজান দিতে দেয় না। সেই সঙ্গে কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্টান গড়ে তুলতে দেয়া হয় না।
এই বিষয়ে আকসুমের প্রশাসন কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে তারা জানিয়েছে, এই অঞ্চলটিতে খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা শান্তিতে বসবাস করছেন।
সূত্র: বিবিসি
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন