ইংল্যান্ডকে হারিয়ে যুব বিশ্বকাপে পঞ্চম বাংলাদেশ

যুব বিশ্বকাপে একটু দেরিতেই জ্বলে উঠল বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আজ নিউজিল্যান্ডের কুইন্সটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম স্থান নির্ধারণী প্লে অফে ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে ইংলিশদের গড়া ২১৬ রানের স্কোর বাংলাদেশ পেরিয়ে (২২০ /৫) যায় ১৫ বল হাতে রেখেই। ব্যাটে-বলে আজও দুর্দান্ত ছিলেন অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন। গ্রুপ পর্বে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই হেরেছিল বাংলাদেশ।

জয়ের জন্য ২১৭ রান করাটা কঠিন ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ব্যাটিং ফর্মের কারণে একটু দুশ্চিন্তা ছিলই। পিনাক ঘোষ ও সাইফ হাসানের ওপেনিং জুটিটা অবশ্য মন্দ হয়নি। আসে ২৮ রান। তবে ২৮ রানেই পিনাক ঘোষ ফিরে গেলে সাইফ আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও তৌহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দলীয় সংগ্রহ টেনে নিয়ে যান ৮২ পর্যন্ত।

আমিনুল বিদায় নেন ২০ রানে, তৌহিদ ১০ রানে। কিন্তু একপ্রান্তে অধিনায়ক সাইফ ছিলেন অবিচল। দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় আফিফ এরপর সাইফের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। এই দুজনের ৬৬ রানের জুটি জয়ের স্বপ্ন দেখায় বাংলাদেশকে। সাইফ ৮৯ বলে ৪টি বাউন্ডারিতে করেন ৫৯ রান। আফিফ ৮৬ বলে ৭১ রান করে আউট হন জয়ের খুব কাছাকাছি এসে। আফিফের ইনিংসটিতে ছিল ৭টি চার ও একটি ছক্কা। সাইফের পর আফিফের সঙ্গে জুটি হয় মোহাম্মদ রাকিবের। আফিফ-রাকিবের ৬১ রানের জুটি জয়ের খুব কাছে নিয়ে আসে বাংলাদেশকে। দলীয় ২০৯ রানের মাথায় আফিফ উডসের বলে বোল্ড হন। তবে রাকিব ২৮ (৪২ বলে) রান করে দলকে নিরাপদে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।

এর আগে, বাংলাদেশের বোলিং-পারফরম্যান্স ছিল দারুণ। টসে জিতে বোলিং নিয়ে ইনিংসের প্রথম ২৫ ওভারে ইংলিশদের আধিপত্যের মুখে পড়লেও শেষ ২২ ওভারে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বোলাররা নিজেদের সামলে নিয়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহটা প্রত্যাশামাফিক হতে দেননি।

৪৭.২ ওভারে ২১৬ রানেই গুটিয়ে যাওয়া ইংল্যান্ড প্রথম ২৫ ওভারে ১ উইকেটে ১৩৮ রান তুলে ফেলেছিল। কিন্তু শেষ ২২ ওভারে ৭৮ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে পথহারা তারা। এ জন্য অবশ্য বাংলাদেশের দুই পেসার কাজী অনিক ও হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত অবদান। দারুণ অবদান অফ স্পিনার আফিফ হোসেনেরও। হাসান ও আফিফ ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন। অনিক নিয়েছেন ২ উইকেট। এ ছাড়া রবিউল হক ও মোহাম্মদ রাকিব তুলে নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।

ব্যাটিংয়ে নেমে টম বেনটনের উইকেট হারিয়েছিল ইংল্যান্ড দলীয় ১৭ রানের মাথায়। কিন্তু এরপর পুরোপুরিই ‘ইংরেজ-রাজ’। অধিনায়ক হ্যারি ব্রুক ও লিয়াম ব্ল্যাংকের পঞ্চাশোর্ধ্ব দুই ইনিংসে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দল নিজেদের সংগ্রহটা তিন শর ওপরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্নই দেখছিল। ব্যাংকসের ব্যাট থেকে আসে ৭৪,৮২ বলে। ব্রুকস ৬৬ বলে করেন ৬৬। এই জুটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতেই মোহাম্মদ রকিবের বলে ব্ল্যাংক রবিউল-তৌহিদের যৌথ উদ্যোগের (অনেকটা পথ দৌড়ে এসে ছক্কা ঠেকিয়ে বলটা শূন্যে তুলে দেন তৌহিদ। এরপর পেছনে থাকা রবিউল ক্যাচট নেন) দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হলে বাংলাদেশের ভাগ্য খুলে যায়। এরপর ইংল্যান্ডের উইকেট পড়েছে নিয়মিত বিরতিতেই। উইকেটরক্ষক জ্যাক ডেভিসের ৪১ বলে ২৬ আর প্রেম সিসোদিয়ার ৩২ বলে ২০ রান ছাড়া এরপর ইংল্যান্ডের ইনিংসে বলার মতো কোনো সংগ্রহ নেই।