ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন ভারত-পাকিস্তানের সাদবিরোধী মুরব্বিরা
বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বি ভারতের মাওলানা আহমদ লাটসহ তার সফরসঙ্গীরা। তাবলিগের এ অংশটি কেন্দ্রীয় আমির মাওলানা সাদবিরোধী হিসেবে পরিচিত। তারা ইজতেমার প্রথম দুদিন বয়ান ও দোয়া পরিচালনা করবেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর মাওলানা আহমদ লাট ইজতেমা ময়দানে এসে পৌঁছান।
কাকরাইল মারকাজের মুরব্বি মাওলানা জুবায়ের আহমদের ছেলে মাওলানা হানজালা জানান, ‘মাওলানা আহমদ লাটসহ আলমি শুরার মুরব্বিরা ময়দানে এসেছেন। তিনি বাদ মাগরিব ইজতেমা ময়দানে বয়ানও করেছেন।
মাওলানা আহমদ লাটের সঙ্গে আরও রয়েছেন মাওলানা জুহাইরুল হাসান, ভাই ফারুক, প্রফেসর সানাউল্লাহ আলীগড়সহ ভারত-পাকিস্তানেরে সাদবিরোধী তাবলিগি মুরব্বিরা।তাবলিগের পরিচিতমুখ পাকিস্তানের মাওলানা তারিক জামিল এবারের ইজতেমায় অংশ নেয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেও অসুস্থতার কারণে আসছেন না।’
তবে মাওলানা আহমদ লাটের ইজতেমায় আসার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে মাওলানা সাদ অনুসারীরা।
সাদ অনুসারী কাকরাইল মসজিদের মুকিম মাওলানা আশরাফ আলি বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল মাওলানা সাদ ইজতেমায় না আসলে বিপরীতপক্ষের মাওলানা আহমদ লাট ও মাওলানা ইবরাহিম দেওলা আসবেন না। কিন্তু এখন দেখছি তারা শর্তভঙ্গ করে লাট সাহেবকে নিয়ে এসেছেন। এটি দুঃখজনক।’
প্রসঙ্গত, বিশ্ব তাবলিগ এখন দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পরিচালিত হচ্ছে। তাবলিগের মূল মারকাজ দিল্লির নিজামুদ্দীন মসজিদ থেকে মাওলানা সাদ কান্ধলভী পরিচালনা করেন। মাওলানা সাদবিরোধীরা পাকিস্তান রাইবেন্ড মার্কাজের সহায়তায় আলমি শুরা পরিচালনা করেন।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অংশদারিত্বের বিবাদে দিল্লি-লাহোর জড়িয়ে পড়লে বিশ্বজুড়েই এর প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশে তাবলিগ জামায়াতের প্রধানকেন্দ্র কাকরাইল মসজিদেও ছড়িয়ে পড়ে এ বিভক্তি।
বাংলাদেশের তাবলিগের মূল মারকাজ কাকরাইল এত দিন দিল্লির নিজামুদ্দীন মসজিদের অধীনে পরিচালিত হলেও গত ইজতেমা থেকে দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কাকরাইলের শুরা মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা ওমর ফারুকসহ ৫ জন আলমি শুরার পক্ষে রয়েছেন।
অন্যদিকে কাকরাইলের শুরার অন্যতম সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা মোশাররফ ও খান শাহাবুদ্দীন নাসিমসহ ৬ জন নিজামুদ্দিন মার্কাজের অনুসরণ করেন।
২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমার পর তাবলিগ জামাতের দুপক্ষ আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে। নিজামুদ্দীন মারকাজপন্থী মাওলানা সাদের অনুসারীরা ১১, ১২, ও ১৩ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেন। এর বিরোধিতা করে জানুয়ারির ১৮, ১৯ ও ২০ ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করে হেফাজতপন্থী মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা।
এ নিয়ে সারা বছরই উত্তেজনা থাকে। গত ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।
গত ২৪ জানুয়ারি ধর্ম মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত তাবলিগের দুপক্ষের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ১৫ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন