ইবি রেজিস্ট্রারের অশ্লীল ভিডিও ফাঁস, অব্যাহতির দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের আপত্তিকর ভিডিও কলের স্ক্রিন রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে। ১ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই ভাইরাল হয়ে যায়।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে সমালোচনার ঝড়।
এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তবে রেজিস্ট্রার ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিকে ‘এআই ইডিট’ বলে দাবি করছেন।

শনিবার ইবির ত্রাস’ নামক ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ভিডিওতে রেজিস্ট্রার আলী হাসান ও অজ্ঞাত এক মেয়েকে বিভিন্ন অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যায়। তবে অপর পাশের মেয়েটির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের একেরপর এক এমন কর্মকান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মান চরমভাবে ক্ষুন্ন করছে বলে দাবি সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

এদিকে প্রকাশিত ঘটনার সত্যতা উদঘাটন না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্ট্রার পদ থেকে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম। রবিবার (২ জুন) সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, রেজিস্ট্রার পদটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। পদাধীকারবলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সভা ও দাপ্তরিক কাজে উপস্থিত থাকতে হয়। এমন একটি অশ্লীল ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার ফলে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সভা ও দাপ্তরিক কাজে উনার উপস্থিতি একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাকে রেজিস্ট্রার পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতির দাবি জানাচ্ছি। সে সাথে ঘটনার সত্যতার যাচাইয়ে জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও ইতোপূর্বে রেজিস্ট্রারের সাথে এক ঠিকাদারের অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে একটি অডিও প্রকাশের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। সেই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, এগুলো এআই দিয়ে ইডিট করা ভিডিও। আমাকে হেনস্তা করার জন্য বিরোধী পক্ষ এটি করেছেন। ন্যাচারালি এর শাস্তি তারা পাবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, বিষয়টি শুনেছি। তবে আমি এখনও ভিডিওটি দেখিনি। এজন্য মন্তব্য করছি না।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে প্রশাসনের সকলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম উল্টাপাল্টা পোস্ট করা হয়। এসব নেগেটিভ কাজকর্ম যারা করে তাদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। এসব উড়ো জিনিসের উপর ভিত্তি করে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। কারো কাছে যদি শক্তিশালী প্রমাণ থাকে তাহলে সরাসরি সেটা দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। আর এই বিষয়টি যেহেতু সামনে এসেছে, এর সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের নিয়োগ সংক্রান্ত প্রায় ১৪ টিরও বেশি অডিও ভাইরাল হয়। এর মধ্যে একাধিক ইবি রেজিস্ট্রারের কণ্ঠ সদৃশ ‘অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত’ আলাপন ফাঁস হয়। সেই ঘটনায় তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। পরে এগুলো এডিট দাবি করে থানায় জিডি করে কর্তৃপক্ষ। তবে যেসব ভুয়া ফেসবুক পেইজ ও আইডি থেকে এসব অডিও ও ভিডিও পোস্ট করা হয় সেগুলো বন্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।