ইরানের গোপন পরমাণু কর্মসূচির নথিপত্র ইসরাইলের হাতে!

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ইরান গোপনে পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি নিয়ে ইরান ও পশ্চিমা শক্তির মধ্যে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বকে উস্কে দিল ইহুদী রাষ্ট্রটি।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার প্রমাণস্বরূপ গোপন ফাইল (নথিপত্র) প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে এ দাবি করে ইসরাইল।

নেতানিয়াহু জানান, ইসরাইলের হাতে আসা কয়েক হাজার পৃষ্ঠার নথিপত্রই দাবি করে যে, পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে এ ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে গিয়ে বিশ্ববাসীকে প্রতারিত করছে ইরান।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে ২০১৫ সালে ইরান পরমাণু কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে আসে। তবে শুধুমাত্র জ্বালানী খাতে পরমাণু কার্যক্রম চালাতে পারবে বলে ছাড় দেয়া হয় দেশটিকে।

তেল আবিবে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ইংরেজিতে এক প্রদর্শনীতে জানান, এসব নথিপত্র তেহরানের গোপন সংরক্ষণাগারে রাখা এসব অনুরূপ নথিপত্র ইসরাইলি গোয়েন্দাদের মাধ্যমে তাদের হাতে আসে।

তিনি নথিপত্রগুলো পরিচয় করিয়ে দিতে বলেন, এখানে ৫৫ হাজার পৃষ্ঠার প্রমাণ আছে। পরমাণবিক অস্ত্র কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে এতে ১৮৩ সিডি ডিস্কে ৫৫ হাজার ফাইল আছে। এ কর্মসূচির নাম প্রজেক্ট আমাদ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তবে ইসরাইলের এ দাবির প্রেক্ষিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ যারিফ বলেন, নেতানিয়াহু মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন। তবে ইউরোপীয় শক্তি বলেছে, তারা এ চুক্তি রক্ষায় সমঝোতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় ইরানের সাথে হওয়া আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে নিজদের বেরিয়ে আনতে হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ও ইউরোপীয় দেশগুলো ইরানের সাথে করা চুক্তির ‘সর্বনাশা ভুলগুলো’ মে ১২ তারিখের আগে শোধরানো না হলে তিনি ইরানের ওপর আবার নিষেধাজ্ঞা আবার করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের দুই রাষ্ট্রপ্রধান ঘোষণা দেন, তারা ২০১৫ সালে করা চুক্তিটির বিভিন্ন শর্ত আরও বিস্তৃত ও বর্ধিত করতে কাজ করছেন।

কিন্তু ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলছেন, সাত পক্ষের মধ্যে সাক্ষরিত চুক্তির শর্ত নিয়ে নতুন করে দর কষাকষির কোনো অধিকার পশ্চিমা দেশগুলোর নেই।

একই সাথে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ‘ব্যবসায়ী’, তাই আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করার কোনো যোগ্যতা তার নেই।

‘আপনার রাজনীতিতে কোনো অতীত অভিজ্ঞতা নেই। আইন বিষয়ে কোনো অতীত অভিজ্ঞতা নেই। আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পর্কেও আপনার কোনো অতীত অভিজ্ঞতা নেই,’ মন্তব্য করেন রুহানি।