ইসির কাছে ২০ দলের ১৩ প্রস্তাব

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব গায়েবি মামলা স্থগিত করার দাবি জানিয়েছে ২০ দলীয় ঐক্যজোট।একই সঙ্গে তারা সকল ডিসি-এসপিদের বদলি ও রিটার্নিং কর্মকর্তার আগে গণমাধ্যমে ফল না প্রকাশের ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছে।

রোববার (২৫ নভেম্বর) ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে ১৩ দফা দাবি নিয়ে লিখিত প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জোটের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করে।

বিএনপিকে নিয়ে কামাল হোসেনের উদ্যোগে গঠিত জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ইসিতে ১৩ দফা দাবি জানিয়ে এসেছিল কয়েক দিন আগেই। তাতে তিন সচিবসহ প্রশাসনের ২২ কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত আইজিপি, র‌্যাবের ডিজি, ডিএমপি কমিশনারসহ ৭০ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

রোববার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ২০ দলীয় জোটের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপির) চেয়ারম্যান ও জোটের অন্যতম নেতা কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেন, ইসি আমাদের ১৩ দফা দাবি গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন এবং দাবিগুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

এলডিপি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বিতর্কিত কর্মকর্তাদের শাস্তি চাই না, বদলি চাই। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে এক জেলার কর্মকর্তাদের অন্য জেলায় বদলি করা জরুরি। এখনও সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। পুলিশ নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। ইসির নির্দেশনার মাঠ পর্যায়ে কোনো প্রতিফলন নেই।

কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেন, এখনও সারাদেশে গায়েবি মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এসব মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ না থাকায়, নির্বাচনের আগে পুলিশ বিএনপির এজেন্টদের এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখাবে। তাই আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব মামলা স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছি।

তিনি বলেন, আজকের দিন পর্যন্ত ইসি প্রমাণ করতে পারেননি তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করছেন। তাদের সীমাবন্ধতা আছে সেটা আমরা জানি, তবে আমরা যে ১৩টি প্রস্তাব এনেছি তাতে ইসি একমত হয়েছে।

২০ দলীয় জোটের দাবি সম্বলিত চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের তালিকা দেয়া হয়েছিল। তাদের নির্বাচনকালীন সময়ে অন্যত্র বদলির দাবি জানানো হয়েছিল। ২০ দলীয় জোটের প্রতিনিধি দলও মনে করে এগুলোর বাস্তবায়ন জরুরি। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য অতীতে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে ইসি।

চিঠিতে আরো বলা হয়, ইসির নির্দেশনা সত্ত্বেও সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ব্যবহার করে নির্বাচনী এলাকা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। কমিশনকে এ ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারি রেডিও ও টেলিভিশন ইসির নিয়ন্ত্রণে থাকা বাঞ্ছনীয় বলেও মনে করে বিশ দলীয় জোট। বেসরকারি গণমাধ্যমের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ইসির তরফ থেকে একটি গাইড লাইন করা প্রয়োজন। ১৫ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা প্রয়োজন।

এসময় আরো উপিস্থত ছিলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়ম মোহাম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৩০ ডিসেম্বর ভোট হবে। এর আগে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা, ২ ডিসেম্বর বাছাই ও ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় রয়েছে।