ইসির গুরুত্বপূর্ণ নথি চার কমিশনারের কাছে উপস্থাপনের নির্দেশ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও ইসি সচিবের সঙ্গে নানা বিষয়ে ভিন্নমত নিয়ে আলোচনার মধ্যে প্রায় এক মাস পর সিইসির কক্ষে গেলেন চার নির্বাচন কমিশনার।
মঙ্গলবার বিকালে সিইসির কক্ষে এ চার কমিশনার দীর্ঘ সময় বসে আলোচনা করেন। এর মধ্যে দিয়ে সিইসির সঙ্গে অন্য চার কমিশনারের দূরত্ব কিছুটা হলেও কমেছে বলে মনে করছেন ইসির কর্মকর্তারা।
এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সব কার্যক্রম পরিচালনায় আইন ও বিধিমালা অনুসরণের নির্দেশ দিয়ে মঙ্গলবার একটি অফিস আদেশ জারি করেছে ইসি সচিবালয়।
এর মধ্য দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পাশাপাশি অন্য নির্বাচন কমিশনারদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে নথি উপস্থাপন করতে হবে ইসি সচিবালয়কে।
ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শাহ আলম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়- ইসি সচিবালয়ের সব কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন বিধিবিধান, রীতি, পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। সচিবালয়ের কিছু কিছু কার্যক্রম ইসি সচিবালয় আইন ও কার্যপ্রণালী বিধিমালা এর বিধি বিধানের ব্যত্যয় ঘটেছে; যা ৪ নির্বাচন কমিশনারের নজরে এসেছে। এ সংক্রান্ত বিধিবিধান প্রতিপালন করে ইসি সচিবালয়ের সব কাজ পরিচালনার জন্যে নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা দিয়েছেন।
আইন-বিধি যুক্ত করে এ অফিস আদেশে আরও বলা হয়েছে, শাখা হতে কোনো বিষয়ে নথি উপস্থাপনকালে তা কোন পর্যায়ে নিষ্পত্তি হবে, তা নথিতে উল্লেখ থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশন বরাবর কোন নথি উপস্থাপন হবে, তা কার্যপ্রণালী বিধির তফসিলে উল্লেখ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন বরাবর উপস্থাপিতব্য বিষয়াদির ক্ষেত্রে এ বিধির ৩ (৫) অনুসরণ করতে হবে। মাঠ কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব বরাবর এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর আগে অভিযোগ উঠেছিল, ইসি সচিবালয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিব ছাড়া অন্য নির্বাচন কমিশনারকে অবহিত করা হয় না। কিছু কিছু কার্যক্রমে ‘বিধিবিধানের ব্যত্যয় ঘটেছে’ উল্লেখ করে চার নির্বাচন কমিশনারের আন-অফিসিয়াল (ইউও) নোট দিয়েছিলেন। ওই নোটে বলা হয়, যে পদ্ধতিতেই নিষ্পত্তি করা হোক না কেন বিধির ৪ (৪) উপবিধি মতে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে বিষয়াদি নিষ্পত্তি করার বিধান থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে লঙ্ঘিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।
অনেক দিন পর একসঙ্গে বৈঠক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কক্ষে গিয়ে প্রায়শ আলোচনার রেওয়াজ ছিল কে এম নুরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসিতে। তবে ইভিএম নিয়ে আরপিও সংস্কার সংক্রান্ত ৩০ আগস্টের কমিশন বৈঠকের পর ৫ সদস্যের ইসিতে সিইসির কক্ষে ঘরোয়া বৈঠক হয়নি বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা। প্রায় এক মাস পর মঙ্গলবার বিকালে সিইসির কক্ষে চার নির্বাচন কমিশনার একসঙ্গে বৈঠক করেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এটা ছিল পিউরলি ঘরোয়া আলোচনা। আমরা অনেক ইস্যু নিয়ে নিজেরা আলোচনা করেছি। আপনারাই আমাদের বিষয়টি (ইউও নোট) নিয়ে অস্বস্তি দেখছেন। আসলে আমরা তো অস্বস্তিতে নেই। আগেও অনানুষ্ঠানিক এভাবে আমরা বসতাম, আজও বসেছি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, কিছু বিদেশি সাংবাদিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও বসার প্রস্তাবনা এসেছিল। কিন্তু ইসির সঙ্গে তাদের বৈঠক হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন