ব্যাংকে গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড়
‘ইহাকে কী করোনার ভাষায় শারীরিক দূরত্ব বলা হয়?’
শহীদুল ইসলাম। পেশায় শিক্ষক ও সাংবাদিক। ব্যাংকে গিয়েছিলেন বেতনের টাকা তুলতে। গিয়েই হোচট খেলেন। মানুষ আর মানুষ। কি আর করা, টাকা তো তুলতে হবে। নয়লে যে মাস চলবে না। নিজের মুখমন্ডলে মাস্ক থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে শারীরিক সামাজিক দূরত্ব মানতে চায়লেন। কিন্তু বিধিবাম। শারীরিক দূরত্ব তো দূরের কথা একজনের শরীরের সাথে অন্যজনের শরীর ঘেষেও অবস্থান করা দায়। বল প্রয়োগ আর হুমড়ি খেয়ে ঠেলাঠেলিতে মুখের মাস্কই কখন খুলে পড়ে সেটাও বোঝা দায়। ব্যাংকে যেনো হাট বসেছে, মানুষের হাট, বাধ্য হয়ে টাকা তোলার জন্য।
শহীদুল ইসলামের মতো এদিন অনেক গ্রাহকই এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখিন হয়েছেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বুধবার থেকে ‘সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন’ ও সাধারণ ছুটি শুরুর আগের দিন মঙ্গলবার ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। এ দৃশ্য গোটা দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকেই বিভিন্ন ব্যাংকে প্রবেশের জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন গ্রাহকরা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাইনও দীর্ঘ হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আর ব্যাংকের ভেতরে তাদের সেবা দিতে হিমশিম খান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তবে অনেক ব্যাংকে শারীরিক দূরত্ব আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যাংকিং লেনদেন করতেও দেখা যায়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে বুধবার থেকে এক সপ্তাহ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এ কারণে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের সব তফসিলি ব্যাংক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে চালু থাকবে এটিএম এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে লেনদেন।
এদিকে, মঙ্গলবার চাঁদ দেখা গেলে বুধবার থেকে বাংলাদেশে রোজা শুরু হবে। টানা বন্ধ শুরুর আগে শেষ কর্মদিবস মঙ্গলবার চাপ বেশি থাকবে বলে বেলা ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকে ব্যাংকগুলো।
ব্যাংকাররা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ব্যাংকে ঢোকাতে হচ্ছে বলে সময় বেশি লাগছে, তাতে লাইন দীর্ঘ হচ্ছে, অপেক্ষাও বাড়ছে। তবে অনেকসময় গ্রাহকরা শারীরিক দূরত্ব মানতে পারছেন না। ঠেলাঠেলিও করেছেন।
শিক্ষক ও সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম তার ফেসবুকে লেখেন: ‘ইহাকে কী করোনার ভাষায় শারীরিক দূরত্ব বলা হয়? ব্যাংক হইতে বেতন-ভাতা উত্তোলন করিবার তরে চেক জমা দিয়া টোকেন গ্রহণ করিতে যাইয়া বল প্রয়োগ করিয়া একে অপরের শরীরের উপর হুমড়ি খাইয়া পড়িবার নাম কী শারীরিক দূরত্ব? এহেন দৃশ্য দর্শনে মনে অভিলাষ জাগিল- ‘আমার বলার কিছু ছিল না, না গো! চেয়ে চেয়ে দেখলাম…।’
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশে বিভিন্ন বিধিনিষেধ চলছে। এর আওতায় ৫ থেকে ১১ এপ্রিল ব্যাংকে লেনদেন হয়েছে সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। আর সোমবার বেলা ১টা পর্যন্ত লেনদেন চলে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন