ঈদের ছুটিতে সড়কে ঝরলো ৫৭ প্রাণ
ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এসব ঘটনায় আরও প্রায় শতাধিক লোক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ৫ দিনে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
এর মধ্যে শনিবার নাটোরের বড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কদিমচিলান এলাকায় বাস ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজনসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে ফেনীতে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালানোর সময় বাসের নিচে পড়ে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ৬ যাত্রী নিহত হয়েছেন।
এছাড়া সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ঈদের দিন দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জন গরু ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। নওগাঁয় ট্রাকের চাপায় মারা গেছেন একই পরিবারের ৩ মোটরসাইকেল আরোহী।
রাজশাহীতে ৩ জন, কুমিল্লায় ৬ দুইজন, বগুড়ায় দুটি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ ৫ জন। এ ছাড়া কুষ্টিয়ায় ৩, মাদারীপুরের টেকেরহাটে ৩, ময়মনসিংহে ২ জন এবং গাজীপুর, জামালপুর, খাগড়াছড়ি, নীলফামারী, নাটোর, বগুড়া ও রাজধানী ঢাকায় ১ জন করে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কদিমচিলান এলাকায় বাস ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজনসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২৫ জন। শনিবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে নাটোর-পাবনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন লেগুনার যাত্রী পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি শ্মশানপাড়ার মিন্টু রোজারিওর স্ত্রী আদরী বিশ্বাস (৩৫), তার ছেলে প্রত্যয় বিশ্বাস (১২) ও ১০ মাস বয়সী শিশু মেয়ে স্বপ্না বিশ্বাস, লেগুনার চালক নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের আব্দুর রহিম (২৮), বড়াইগ্রামের নারায়ণপুর গ্রামের আবু তাহেরের স্ত্রী রজুফা খাতুন (৫০), রূপচাঁদের স্ত্রী শেফালী খাতুন (৩৫), জামাইদিঘা গ্রামের নুরফেল সরদারের স্ত্রী লগেনা বেগম (৫০), টাঙ্গাইলের গোপালপুরের বাসিন্দা আর আর পি ফিড কোম্পানির কর্মকর্তা রোকন উদ্দিন (৫৫), পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া মীর কামারী এলাকার সালামতউল্লাহর স্ত্রী শাপলা খাতুন (২১) ও ঈশ্বরদী এলাকার আব্দুস সোবহান (৭৫)।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি জিএম শামস নুর জানান, বিকাল পৌনে ৪টায় কদিমচিলান সাদিয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে পাবনা থেকে বগুড়াগামী চ্যালেঞ্জার পরিবহনের একটি বাসের (ঢাকা মেট্রো-চ-৫৬৫৯) সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী লেগুনার সংঘর্ষ ঘটে।
এতে ঘটনাস্থলেই ১০ জন নিহত হন। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নাটোর সদর হাসপাতাল, বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতাল ও বনপাড়া আমিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৪ জন মারা যান।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রাজ্জাকুল ইসলাম দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহতদের জন্য ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
রাজশাহী ব্যুরো: রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালিতে অটোভ্যান উল্টে নানা-নাতি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কাটাখালির সমশাদিপুর এলাকায় রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এছাড়া মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন।
শনিবার নিহতরা হলেন কাটাখালীর দেওয়ানপাড়া এলাকার নাজিম আহমেদ (৫০) এবং তার নাতি আরাফাত (৩)। আহতরা হলেন- নাজিমের স্ত্রী আছিয়া বেগম (৪৫) এবং তাদের আরেক নাতি নোমান (৫)।
নাজিমের চাচাতো ভাই ও কাটাখালি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোতালেব জানান, সকালে নাজিম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজের অটোভ্যানে কাপাসিয়া এলাকায় শ্যালিকার বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। এ সময় ভ্যানের ডান পাশের চাকা ভেঙে রাস্তর ওপর উল্টে যায়। এতে তারা চারজন আহত হন। পরে তিনজনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিত্সকরা নাজিম এবং তার নাতি আরাফাতকে মৃত ঘোষণা করেন।
কাটাখালি থানার ওসি মেহেদি হাসান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকল কর্মীরা গিয়ে আহতদের উদ্ধার করেন। হাসপাতালের নেয়ার পর নাজিম এবং তার নাতি আরাফাতা মারা যান।
এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় কামরুজ্জামান লাবলু (৫০) নামে এক বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন। জেলার দুর্গাপুর উপজেলার শালঘরিয়া গ্রামে তার বাড়ি। তিনি দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পার্শ্ববর্তী পুঠিয়া উপজেলার বাঁশপুকুরিয়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) : কুমিল্লার দাউদকান্দিতে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খাদে পড়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অর্ধশত যাত্রী। উপজেলার ঝিংলাতলী এলাকায় শনিবার ভোর ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতদের স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে পুলিশ গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট আলমগীর হোসেন জানান, শ্যামলী পরিবহনের বাসটি উপজেলার ঝিংলাতলী এলাকায় শনিবার ভোরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খাদে পড়ে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক হতাহতদের নাম জানা যায়নি। দুর্ঘটনার পর বাস চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
ফেনী : শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লেমুয়া এলাকায় শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসচাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ৬ যাত্রী নিহত হয়েছেন। রাত ৮টা পর্যন্ত নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। নিহতদের মধ্যে দুই নারী ও চার পুরুষ রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই অটোরিকশাকে মহাসড়কের ভাঙ্গাতাকিয়া এলাকায় পুলিশ ধাওয়া করলে গ্রামীণ সড়কে প্রবেশ করতে মোড় নিলে উল্টোদিক থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের বাসটি অটোরিকশাকে চাপ দেয়। এতে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই ৩ জন এবং হাসপাতালে নেয়ার পর আরও তিনজন মারা যান। আহতদের ফেনী সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে। ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক রাশেদ খান চৌধুরী হতাহতের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : ঈদের দিন দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জন গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের বাতিয়ারপাড়া গ্রামে চলছে শোকের মাতম। ঘটনার দু’দিন পার হলেও এখনও শোকে স্তব্ধ পুরো গ্রাম। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোরবানির গরু-ছাগল বিক্রি শেষে ৩৭টি ছাগল ট্রাকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তারা।
ট্রাকটি যমুনা সেতু পার হয়ে কামারখন্দের ঝাঐল ওভারব্রিজের কাছে পৌঁছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খাদে উল্টে পড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলে দুজন ও বগুড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন ১৬ জন। আহতদের সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, ঢাকা ও উল্লাপাড়ার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। নিহতরা হলেন- আবদুল লতিফ সরদার, তার ভাতিজা মনসুর রহমান, ভাগিনা আবদুল মান্নান ও বিয়াই আবদুল করিম।
কুষ্টিয়া : ঈদের দিন দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত চারজন। বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বটতৈল এলাকায় কুষ্টিয়াগামী একটি যাত্রীবাহী মহেন্দ্রের সঙ্গে দ্রুতগামী একটি ট্রাকের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে মহেন্দ্র আরোহী দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়। নিহতদের একজন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার শিপন। অপরজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এদিন সকালে উপজেলার তারাগুণিয়া বাজারে ট্রাকচাপায় এক শিশু নিহত হয়েছে। নিহত শিশু সাহাবুলের বাড়ি উপজেলার কৈপাল গ্রামে।
কুমিল্লা : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে ৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় মা ও মেয়েসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। ঈদের দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মহাসড়কের ময়নামতি নাজিরাবাজার এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় গাড়ির চাপায় ফারজানা আক্তার ও তার মেয়ে আসফিয়া আমজাদ ঘটনাস্থলে মারা যান।
নিহত গৃহবধূ ফারজানা বুড়িচং উপজেলার উদয়নবাগ গ্রামের আশরাফুজ্জামানের স্ত্রী। একই দিন রাত ৮টার দিকে লাকসাম উপজেলার বিজড়া এলাকায় বাসের চাপায় আল আমিন নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হন।
নিহত আল আমিন লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর এলাকার বাসিন্দা। অপরদিকে ঈদের পর দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মহাসড়কের দাউদকান্দি উপজেলার গাজীপুর এলাকায় বাস উল্টে সড়কের পাশে খাদে পড়ে মো. রুবেল নামে এক বাসযাত্রী নিহত হন। এ সময় আহত হন কমপক্ষে ২০ যাত্রী। নিহত রুবেল চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার বাসিন্দা।
গাজীপুর : টঙ্গীতে বাসচাপায় আহত এক নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা গেছেন। নিহত বিথি আক্তার পিন্নী শরীয়তপুরের টুটুল মিয়ার স্ত্রী। এদিন সকালে টঙ্গীর চেরেগ আলী মার্কেট এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী তুরাগ পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস বিথিকে চাপা দেয়।
বগুড়া ও শেরপুর : ঈদের দিন পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র বন্ধুসহ ৫ জনের প্রাণ গেছে। এর মধ্যে সকালে শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বগুড়াগামী আল-হামরা পরিবহনের একটি বাস একটি সিএনজি অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে তিনজন নিহত হন। তারা হলেন- অটোরিকশার যাত্রী শাজাহানপুর উপজেলার কাটাবাড়িয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল কুদ্দুস প্রামাণিকের ছেলে আলিমুদ্দিন প্রামাণিক, খলিসাকান্দি গ্রামের বাচ্চু প্রামাণিকের স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগম ও মাঝিড়াপাড়া গ্রামের সামছুল হকের ছেলে অটোরিকশাচালক শফিকুল ইসলাম। দুপুরে শেরপুরের বোয়ালকান্দির ধুনট-শেরপুর আঞ্চলিক সড়কের বোয়ালকান্দি এলাকায় বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বন্ধু। তারা হলেন- ঢাকার পিপলস ইউনিভার্সিটির বিএসসির শিক্ষার্থী সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে শামীম রেজা শিপু ও একই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে সোহেল রানা।
নওগাঁ : মহাদেবপুরে ট্রাকচাপায় একই পরিবারের তিন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের মহাদেবপুর উপজেলার খোর্দ্দনারায়ণপুর ব্রিজ নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা মোটরসাইকেলে রাজশাহী যাচ্ছিলেন। তারা হলেন- পোরশা উপজেলার ঘাটনগর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে সুমন ও তার স্ত্রী ইভা এবং ইভার মা রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার বালিয়া পুকুর গ্রামের ইউছুব আলীর স্ত্রী রুবিনা পারভীন পারুল।
টেকেরহাট : মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টেকেরহাট-ফরিদপুর মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায় একটি বাস। এতে ঘটনাস্থলেই তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। লোকাল বাসটি ফরিদপুর থেকে যাত্রী নিয়ে টেকেরহাট বন্দরে আসছিল। নিহতরা হলেন- রোজিনা বেগম (২৫), আবদুর রব মোল্লা (৬০) ও নূপুর বেগম (৩০)।
ময়মনসিংহ : ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সদর উপজেলার চুরখাই নামকস্থানে মঙ্গলবার বিকালে পিকআপ ভ্যানচাপায় কালু মিয়া নামে এক বৃদ্ধ পথচারী নিহত হন। তার বাড়ি চুরখাই গ্রামে। অন্যদিকে ফুলপুরের সাহাপুরে শুক্রবার সকালে বাসচাপায় শামসুল আলম নামে আরেক পথচারী ঘটনাস্থলেই মারা যান।
জামালপুর : বৃহস্পতিবার বিকালে জামালপুর পৌরভবনের সামনে গাছচাপা পড়ে অটোরিকশার এক যাত্রী নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন। নিহত মো. মোখলেছ পৌরসভার যোগিরঘোপা এলাকার মো. মুনছুর আলীর ছেলে।
খাগড়াছড়ি : মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে যাত্রীবাহী বাস উল্টে মো. এরশাদ মিয়া নামে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নারী ও শিশুসহ আরও অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, বাসচালক মোবাইলে কথা বলার সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) : কিশোরগঞ্জে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা লাগায় খায়রুল ইসলাম নামে এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ-বড়ভিটা সড়কের বড়ডুমুরিয়া পুলেরপাড় নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত খায়রুল সদর ইউনিয়নের মুসা গ্রামের সংসার আলীর ছেলে ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
বড়াইগ্রাম ও বাগাতিপাড়া (নাটোর) : মঙ্গলবার দুপুরে বড়াইগ্রামে দ্রুতগামী যাত্রী বোঝাই বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মঞ্জুয়ারা বেগম নামে এক গার্মেন্টকর্মী নিহত হয়েছেন। এ সময় নারী-শিশুসহ আরও কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে নাটোর-বাগাতিপাড়া সড়কের তেবাড়িয়ায় মহাসড়ক পারাপারের সময় ট্রাকের ধাক্কায় একেএম সাদিকুল ইসলাম বাবু নামে এক বায়িং হাউস কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে।
তালতলী (বরগুনা) : ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বরিশাল-তালতলী মহাসড়কের সাহেববাড়ী নামক স্থানে ভাড়ায় টানা মোটরসাইকেল ও মাহেন্দ্র (আলফা) মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী আবদুছ ছোবাহান মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও দু’জন।
শ্রীপুর (গাজীপুর) : শ্রীপুরে মোটরসাইকেল আরোহী আহত এক নারীকে ছেঁচড়িয়ে নেয়ায় প্রাইভেটকারে আগুন দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে প্রাইভেটকার চালক আল-আমীন মাহমুদকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি দেলোয়ার হুসেন জানান, মহাসড়কে একটি মোটরসাইকেলকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায় একটি মাইক্রোবাস। এতে ওই নারীসহ দুই মোটরসাইকেল অরোহী সড়কে পড়ে যান। এ সময় পেছনে থাকা দ্রুতগামী একটি প্রাইভেটকার ওই নারীকে ছেঁচড়িছে নিয়ে যেতে থাকে। পরে স্থানীয় জনতা এটিকে আটক করে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং চালককে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ডেমরা : রাজধানীর ডেমরায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক নারী লেগুনাযাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দু’জন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম সুমি ইসলাম (৪৮)। আহতরা হলেন- মেম্বার আলী (৪৮) ও তৈয়ব হোসেন (৩২)। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের লাম ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহতরা চিকিৎসাধীন আছেন।
আগৈলঝাড়া (বরিশাল) : বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-গোপালগঞ্জ মহাসড়কের আগৈলঝাড়ার বড়মগড়া পশ্চিম পাশে নসিমন উল্টে ৯ জন আহত হয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন