ঈদে এক কোটির বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়বে: ডিএমপি
পবিত্র ঈদুল ফিতরে এক থেকে সোয়া কোটি মানুষ ঢাকা ছাড়বে এ তথ্য জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান বলেন, ঘরে ফেরা এসব মানুষের ভ্রমণ নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করতে সবসময় সচেষ্ট।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মুনিবুর রহমান বলেন, ঈদে অন্তত এক থেকে সোয়া কোটি মানুষ ঢাকা ছাড়বে। তাদের বেশিরভাগ যাবে সড়কপথে। আর এসব সড়কপথের বাসগুলো ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে। এর মধ্যে শুধু সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকেই দেশের ৩৮ জেলায় যাচ্ছে দূরপাল্লার এসব বাস। পরে সেগুলো মাওয়া হাইওয়ে, সিলেট ও চট্টগ্রাম হাইওয়েতে ওঠছে। কিন্তু সেই রাস্তাগুলো সুবিধার নয়। এজন্য যানজট সৃষ্টি হয়। আমরা চেষ্টা করছি এসব রাস্তা যেন যানজটমুক্ত রাখা যায়।
তিনি বলেন, আবার অনেক রাস্তায় সংস্কার কাজ চলছে, দ্রুততম সময়ে সংস্কার হয়ে গেলে, আমাদের জন্য সুবিধা হয়। পাশাপাশি বাসগুলো ছাড়ার সময়ে শিডিউল বিপর্যয় হয়। তখনই রাস্তায় অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে আর সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই বাসের ট্রিপগুলো সঠিক সময়ে দিতে পারলে, শিডিউল বিপর্যয় এড়ানো যাবে। সেদিকেও বাসমালিকদের লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই দিকটাও তদারকি করা হচ্ছে।
ঢাকায় প্রবেশ ও বাহিরপথ স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে-এ কথা জানিয়ে মুনিবুর রহমান বলেন, যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করতে ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী সকল পুলিশ ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, পোশাক শ্রমিকদের শেষ মুহূর্তে একসঙ্গে ছুটি হয়। লাখ লাখ মানুষ সেসময় বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। তখন কিছুটা ভোগান্তি দেখা যায়। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেও কাজ করা হচ্ছে। আশা করি অন্যান্য বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার ভালো সেবা দিতে পারবো।
ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলতে পারবে কি-না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ডিএমপির অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। ট্রাফিক বিভাগ নিয়মিত গাড়ির কাগজ যাচাই করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। অনেক ভালো গাড়ির ফিটনেস থাকে না, আবার দেখতে ভাঙাচোরা মনে হলেও দেখা যায় সেইটার ফিটনেস থাকে। আমরা সব যাচাই-বাছাই করে ঈদযাত্রায় কোনো ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলতে দিব না। রেকার, ডাম্পিং গ্রাউন্ড, জনবল রয়েছে। অনেক সময় ফিটনেস ভালো থাকলেও অযাচিত যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এমন আশঙ্কা থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের ব্যবস্থা থাকে। প্রবেশ ও বাহির মুখে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।
মুনিবুর রহমান বলেন, পোশাক শ্রমিকরা একযোগে যখন যাত্রা শুরু করেন, তখন অযাচিত কিছু যানবাহন ঢুকে পড়ে। চোখে পড়লে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এ নিয়ে সচেতন আছি, ক্রাইম ডিভিশনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি। যাতে ফিটনেসবিহীন গাড়ি বের হতে না পারে, সেজন্য গ্যারেজগুলোতে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে হাইওয়ে পুলিশ অনেকে উন্নত হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশদের সঙ্গে যদি সমন্বয়টা ভালোভাবে করা যায় আর প্রবেশ ও বাহির হতে সমস্যা না হয়, তাহলে এবার খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, টার্মিনালের ভেতর থেকে বাসে যাত্রী ওঠানামার কাজ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই টার্মিনাল হতে বের হয়ে রাস্তা হতে বাসে যাত্রী-নামানোর কাজ করানো যাবে না। গণপরিবহনগুলো নির্ধারিত সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে। বিশেষ করে ছাদে কোনো যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে গমন করবেন না। দূরপাল্লার গণপরিবহনগুলো মহানগরীর মধ্যে যাত্রী ওঠানামার কাজ করবে না। এক্ষেত্রে গেইট লক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।
মোটরসাইকেলে যারা দূরপাল্লার যাত্রী থাকবেন তাদের অবশ্যই যাত্রাকালীন সময়ে হেলমেট পরতে হবে। ঝুঁকি পরিহার করার জন্য মোটরসাইকেল যাত্রীদের অতিরিক্ত মালামাল বহন না করা আহ্বান জানান এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, যে সকল যানবাহনে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহৃত হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডারটি যেন মেয়াদোত্তীর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ না থাকে সে বিষয়টি যাত্রাপথের প্রাক্কালে নিশ্চিত করতে হবে। লঞ্চ টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দর কেন্দ্রিক যাত্রীদের গমনাগমন সুষ্ঠু করার জন্য ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সচেষ্ট থাকবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন