উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাচ্ছেন ট্রাম্প!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে এবার অভিনব অভিযোগ তুললেন।
তিনি দাবি করেছেন, নিউ ইয়রক টাইমসের এক প্রতিবেদনের জন্য জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রধান নেতা আবু বকর আল-বাগদাদিকে হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
শনিবার এক টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘এককভাবে মোস্ট ওয়ানটেড সন্ত্রাসী বাগদাদিকে হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা নস্যাৎ করেছে ব্যর্থ নিউ ইয়র্ক টাইমস। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে তাদের অসুস্থ অ্যাজেন্ডার জন্য এটি হয়েছে।’
গুরুতর এই অভিযোগ আনলেও ট্রাম্প তার দাবির পক্ষে কোনো ব্যাখ্যা দেননি, যেমনটি তিনি প্রায়ই করে থাকেন। নিউ ইয়র্ক টাইমস কীভাবে বাগদাদিকে ধরায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে, সে সম্পর্কে কিছুই বলেননি তিনি। এ যেন উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানো!
এক বিবৃতিতে নিউ ইয়র্ক টাইমস অনলাইন নিউজ পোর্টাল দি পলিটিকো-কে বলেছে, ‘টুইটের বিষয়ে পরিষ্কার করতে আমরা হোয়াইট হাউসকে বলেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম মনে করছে, ট্রাম্প হয়তো ফক্স নিউজের একটি প্রতিবেদনের দিকে নির্দেশ করছেন। শুক্রবার কলোরাডোর আসপেনে নিরাপত্তাবিষয়ক একটি সম্মেলনে এক শীর্ষ জেনারেলের করা মন্তব্য ছাপানো হয়েছে ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে।
ওই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর স্পেশাল অপারেশনস কমান্ডের প্রধান জেনারেল টনি থমাস বলেন, ২০১৫ সালে এক অভিযানে আইএসের কাছ থেকে যে তথ্য পাওয়া যায়, তার ভিত্তিকে বাগদাদিকে ধরার খুব কাছে পৌঁছে যায় আমেরিকান বাহিনী।
ফক্স নিউজে খবরে বলা হয়েছে, টনি থমাস বলেছেন, ‘আইএস প্রধান কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে ভালোই তথ্য ছিল মার্কিন সেনাদের হাতে। কিন্তু এর এক সপ্তাহ পরে দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশের প্রভাবশালী একটি জাতীয় পত্রিকায় সে তথ্য ফাঁস করা হয় এবং সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।’
এদিকে, বাগদাদির মৃত্যুর তথ্য নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস মাট্টিস বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন বাগদাদি এখনো জীবিত আছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তার বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। কিন্তু আমাদের ধারণা, তিনি বেঁচে আছেন।’
বাগদাদির মাথার জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিভিন্ন পক্ষ বাগদাদিকে হত্যার দাবি করলেও পুরস্কারের দাবি আজো কেউ করেনি। বিভিন্ন সূত্র দাবি করে থাকে, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের দখল করা অঞ্চলে দেদারছে ঘুরে বেড়ান বাগদাদি।
২০১৪ সালে ইরাকের মসুলের কেন্দ্রীয় মসজিদ আল-নুরিতে খিলাফত ঘোষণা করার মুহূর্তে ধারণ করা ভিডিওতে বাগদাদিকে দেখা গেলেও তার পর থেকে তাকে আর কোথাও দেখা যায়নি। এজন্য পশ্চিমারা তাকে ‘ভূত’ বলে থাকে।
অপরদিকে, নির্বাচনী প্রচার থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ট্রাম্পের দোষ-ত্রুটি ধরতে লেগে আছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। বিপরীতে ট্রাম্পের আক্রমণেরও নিশানায় পরিণত হয়েছে জনপ্রিয় এ দৈনিকটি। ট্রাম্পের অসংলগ্ন বক্তব্য, রাশিয়ার সঙ্গে তার নির্বাচনী টিমের আঁতাতবিষয়ক খবরাখবর ছেপে তার বিরাগভাজন হয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। পত্রিকাটিকে প্রায়ই ‘ভুয়া খবর’ বলে অভিহিত করে থাকেন ট্রাম্প।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন