কোটা সংস্কার আন্দোলন
উসকানি দেওয়া ৩০ ফেসবুক আইডি শনাক্ত
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ফেসবুকে গুজব ও মিথ্যা তথ্য প্রচার এবং উসকানিদাতাদের শনাক্ত করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। এ ধরনের অভিযোগে ৩০টি ফেসবুক আইডি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ আন্দোলনের আরো ১০ নেতার আইডিও রয়েছে। তাঁদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন সাইবার ক্রাইম বিভাগের এডিসি নাজমুল ইসলাম।
এডিসি নাজমুল জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে যাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়িয়েছিল, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সময় ফেসবুকে গুজব ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ৩০টি ফেসবুক আইডি শনাক্ত করা হয়েছে। এসব আইডির মধ্যে গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম নুর, মামুন হাসানসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের আরো অন্তত ১০ জন নেতার আইডি রয়েছে।
এডিসি নাজমুল জানান, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের রাতে যেসব আইডি থেকে উসকানি দেওয়া হয়েছে সেগুলোও শনাক্ত করা হয়েছে। সে রাতে এক ছাত্রের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছেন ইমরান এইচ সরকার। সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এ ছাড়া আরো ২৯টি আইডি শনাক্ত করেছি। তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৮ এপ্রিল দুপুরে শাহবাগে জমায়েত হয় শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। রাত পৌনে ৮টার দিকে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে দফায় দফায় সারা রাত ধরে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এর একদিন পর ১০ এপ্রিল দিবাগত রাতে আবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশা তাঁর হলেরই এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন। তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ১২ এপ্রিল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার পরের দিন এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে ছাত্রলীগ।
আন্দোলনের সময় গত ৮ এপ্রিল ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য প্রচার, মৃত্যু, রগ কাটার গুজব ছড়ানো, উসকানিমূলক তথ্য প্রচার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অপচেষ্টাকারীদের মনিটরিং করে পুলিশ। মনিটরিং শেষে ১১ এপ্রিল কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পুলিশ উপপরিদর্শক এস এম শাহজালাল ‘অজ্ঞাতনামা’ আসামিদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এসব গুজবের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্র নিহত হওয়া ও ঢাবির এক ছাত্রীর রগ কেটে দেওয়ার পোস্টগুলোও রয়েছে। এ ছাড়া কোটা আন্দোলন নিয়ে গুজব ছড়ানো বিভিন্ন ফেসবুক আইডির নাম ও পোস্ট সংযুক্ত করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন