একটি মেটেআলুর ওজন ১৪০ কেজি
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা গ্রামে মেটেআলু চাষে অর্ধশতাধিক চাষি ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ আর হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে জমিতে চাষ করে এক-একটি মেটেআলুর ওজন ১০০ থেকে ১৪০ কেজি হয়েছে। ইতোমধ্যে এ এলাকার উৎপাদিত মেটেআলু ঢাকায় জাতীয় কৃষি মেলায় ‘দেশ সেরা’ নির্বাচিত হয়েছে।
ফকিরহাট উপজেলা বেতাগা গ্রামের কৃষক প্রকাশ চন্দ্র দাশ গত তিন বছর আগে মেটেআলুর চাষ শুরু করেন। তার এই চাষকরা আলুর মধ্যে একটি মেঠেআলুর ওজন হয়েছে ১৪০ কেজি।
ফকিরহাট কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এ পর্যন্ত উৎপাদিত একক মেটেআলু হিসেবে যা বিরল ও সর্ববৃহৎ এলাকায় কৃষক প্রকাশ চন্দ্র দাশের সাফল্য দেখে অন্য কৃষকরাও অধিক লাভজনক মেটেআলুর চায় শুরু করেছেন। প্রকাশ দাশ ছাড়াও একই গ্রামের মনি মোহন দাশ, কার্ত্তিক চন্দ্র দাশ, কংকর চন্দ্র দাশ ও অমল চন্দ্র দাশসহ অর্ধশতাধিক কৃষক মেটেআলুর চাষ করে ব্যাপক সফলতা লাভ করেছেন।
সফল মেটেআলু চাষি প্রকাশ চন্দ্র দাশ জানান, সাধারণত বাগানে ছায়ার মধ্যে কোনো সবজি বা ফসল হতে চায় না। তাই পরিত্যক্ত জমিতে গর্ত খুড়ে মেটেআলু রোপন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। বর্তমানে প্রতি কেজি মেটেআলু বাজারে ৪০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। কিন্তু চাহিদা থাকলেও উৎপাদন কম হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। তার উৎপাদিত একটি মেটেআলুর ওজন হয়েছে ১৪০ কেজি। যা ঢাকায় জাতীয় কৃষি মেলায় ‘দেশ সেরা’ নির্বাচিত হয়েছে। অন্যান্য সবজীর তুলনায় মেটেআলু উৎপাদনে ঝুঁকি ও রোগ বালাই অত্যন্ত কম। বাগানের মধ্যে বিঘা প্রতি মেটেআলু গড় ফলন ৪ টন হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে হাতে কলমে শিক্ষা নিয়ে মেটেআলু চাষ করে তিনি সাফল্য পেয়েছেন বলে জানান।
ফকিরহাট উপজেলা কৃষি অফিসার ও পাচিং পদ্ধতির প্রর্বতক মো. নাছরুল মিল্লাত জানান, মেটেআলুর চাষ করতে গেলে প্রথমে ৩ ফুট চওড়া ও ৪ ফুট আড়ে এবং আড়াই ফুট গভীর করে একটি বড় গর্ত তৈরি করতে হবে। তার পর তাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ছাই এবং ১ কেজি পটাশ, ১ কেজি ইউরিয়া ও ২ কেজি টিএসপি সার দিয়ে গর্তটি মাটি দিয়ে ভরাট করে ১ মাস ফেলে রাখতে হবে। এক মাস পর ওই গর্তে ১টি মেটেআলুর বীজ পুতে দিতে হবে। বীজ থেকে চারা গজালে সেই গাছটি অন্যকোনো গাছে উঠিয়ে দিতে হবে। গাছটির বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাতে পরিমাণ মতো মাটি ও কিছু জৈব সার দিয়ে গর্তের চার পাশে কিছু আবর্জনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। গত বছর যে সমস্ত কৃষক নিয়মানুযায়ী মেটেআলুর চাষ করেছিলেন, তাদের মেটেআলু মাত্র ১ বছরে ১০০ থেকে ১৪০ কেজি ওজন হয়েছে।
প্রথমে কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ নিয়ে কৃষক প্রকাশ চন্দ্র দাশ অধিক লাভজনক মেটেআলুর চাষ শুরু করলেও মাত্র ৩ বছরের মধ্যে মেটেআলু চাষির সংখ্যা অর্ধশতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। মানুষের শরীরের পুষ্টিহীনতা দূর করতে ও সবজির ঘাটতি পূরণ করে মেটেআলু।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন