একাডেমিক কার্যক্রম অনলাইনে চান যবিপ্রবির ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী
দেশে চলমান তাপদাহের কারণে ক্লাস-অফিসের সময় এগিয়ে নিয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)। একাডেমিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ না রেখে সকাল ৮ – ১২ টা পর্যন্ত ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে একাডেমিক কার্যক্রম অনলাইনে করার পক্ষে মত দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
গত শনিবার (২০ এপ্রিল) রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো: আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ক্লাসের সময়সীমা কমিয়ে আনার বিষয়টি জানানো হয়। এরপরই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
অনেকে অভিযোগ করে বলেন, সারাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গরম যশোর ও চুয়াডাঙ্গায়। এবারের মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬° রেকর্ড করা হয় এই যশোরেই, রাস্তার পিচ পর্যন্ত গলে যাচ্ছে। সেখানে স্বশরীরে ক্লাস করা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ই যেতে হয় তাহলে ক্লাস করতে অসুবিধা কোথায়? তীব্র রোদে বাইরে বের হওয়া কষ্টকর।
চলমান তাপদাহের কারণে দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা সমূহ অফলাইনে রেখে সকল ক্লাস অনলাইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।কিন্তু যবিপ্রবির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।তারা চায় পরীক্ষা অফলাইনে রেখে ক্লাস কার্যক্রম অনলাইনে নেয়া হোক। একটি অনলাইন জরিপ চালিয়ে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস করতে চান।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি করে বলেন,এই গরমে বাইরে বের হওয়া কষ্টকর।সেখানে ক্লাস টাইম এগিয়ে লাভ কি যদি আমাদের এই কাঠফাটা রৌদ্রে যেতে হয়। শিক্ষার্থীদের সুবিধা বিবেচনা করে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হোক।এতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হবে না এবং তীব্র রোদের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব হবে।বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যথেষ্ট গাছ এবং ছায়া না থাকারও অভিযোগ করেন অনেক শিক্ষার্থী।
এবিষয়ে ফিশারিজ এন্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগের শিক্ষার্থী সেফা খানম বলেন, ইতিমধ্যে আমরা হিট স্ট্রোক নামটির সাথে পরিচিত হয়েছি। এটি প্রতিরোধের প্রথম এবং প্রধান ধাপ হচ্ছে দিনের বেলায় যথাসম্ভব বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকা, রোদ এড়িয়ে চলা। এইসব কিছুই আমাদের জানা কিন্তু আমরা না করি প্রতিরোধ না করি প্রতিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এত গরমে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই সকল শিক্ষাথীর প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। আজ সুস্থ থাকলে কাল ভালো করে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবো। সুস্থ শরীর আর সুস্থ মন না থাকলে কোন কিছুই সম্ভব না। সবকিছুর জন্য প্রয়োজন একটা সুস্থ পরিবেশ যার মাধ্যমে আমরা সবটাকে জয় করতে পারবো।
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসাইন বলেন, ক্লাস বন্ধ না দিলেও অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম চালানো গেলে শিক্ষার্থীদের সুবিধা হতো। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সেমিস্টার পদ্ধতি পুরাদমে চালানোর জন্য ক্লাস বিরতি দিতে অক্ষম। তবে শিক্ষার্থীদের দৈহিক এবং মানসিক অবস্থার ক্ষতি করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা কখনোই মার্জনীয় নয়। এই বিষয়টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক মন্ডলীদের বিবেচনা করা উচিত।
উল্লেখ্য, চলমান তাপদাহের কারণে ২১-৩০ এপ্রিল ক্লাস-অফিসের সময়সূচি পরিবর্তন করে যবিপ্রবি প্রশাসন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন