এক চালকের সাজার প্রতিবাদে বাকি চালকরা ধর্মঘটে

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালত চলার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেটের সিগনাল অমান্য করায় এক বাস চালককে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয়ার প্রতিবাদে উত্তর চট্টগ্রামসহ রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি মহাসড়কে বাস ও মিনি বাস চালকদের ধর্মঘট চলছে। পরিবহন মালিক শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সকল প্রকার যান চলাচলে বাধা দিচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি মহাসড়কে ধর্মঘটের সমর্থনে অবস্থান নিয়েছে বাস পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কয়েকটি সংগঠন। বুধবার (২৪ অক্টোবর) রাতে ধর্মঘটের ডাক দেয় চট্টগ্রাম জেলা বাস, মিনি বাস যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়ন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা হাটহাজারী বাস স্টেশনে অবস্থান নিয়ে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি মহাসড়কে সকল প্রকার যান চলাচলে বাধা দিচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী। সকল থেকে হাজার হাজার অফিসগামী মানুষ ও স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে না পেরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

যাত্রীরা বলছেন, ধর্মঘটের বিষয়টি তাদের জানা নেই। না জেনে রাস্তায় এসে তারা বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা এ কে এম নাজিমুদ্দীন বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, ‘আগের ধর্মঘটগুলো এত কড়াকড়িভাবে পালন করা হয়নি। তবে এবার যেন ব্যতিক্রম। তারা কোনোভাবেই রাস্তায় যান চলাচল করতে দিচ্ছে না। আমার জরুরি কাজে রাঙামাটি যাওয়া প্রয়োজন কিন্তু যেতে পারছি না।’

হাটহাজারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্মঘটের কারণে উত্তর চট্টগ্রাম ও শহরগামী যান চলাচল বন্ধ আছে। তবে আঞ্চলিক সড়কগুলোতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল স্বাভাবিক আছে। হঠাৎ করে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়ায় দূরের যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তবে বাস মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বিষয়টি সমাধানে আলোচনা চলছে।’

জানা গেছে, গতকাল বুধবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংকেত অমান্য করায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট জিয়াউল হক মীর চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি মহাসড়কের হাটহাজারী বাসস্টেশন চত্বরে মো. দিদারুল আলম (৪৫) নামে এক বাস চালককে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট জিয়াউল হক মীর চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি মহাসড়কে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় ওই এলাকায় ফটিকছড়িগামী একটি বাসের (চট্টগ্রাম-জ ০৫-০০১৩) চালক মো. দিদারুল আলমকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট গাড়ি থামানোর সংকেত দেন। কিন্তু তিনি সংকেত অগ্রাহ্য করে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে ওই স্থান ত্যাগ করেন।

পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি মহাসড়কের হাটহাজারী বাসস্টেশন চত্বরে গিয়ে চালককে আটক ও সংকেত অমান্য করার দায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেন। এরপর তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।