এক যুগেও শেরপুরের এক গুচ্ছ গ্রামের মানুষদের ভাগ্যে জোটেনি কোরবানির মাংস

দীর্ঘ এক যুগেও শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা কোরবানির মাংসের স্বাদ পাননি। অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনাটি সত্য। নারী-পুরুষ ও শিশুসহ শতাধিক মানুষ বসবাস করে এই গুচ্ছগ্রামে।
জানা যায়, গোমড়া গ্রামের আরেক নাম ভূমিহীন পাড়া।

পুরো গ্রামে প্রায় তিন হাজার মানুষের বসবাস, যাদের অধিকাংশই ভূমিহীন। তারা সরকারি খাস জমিতে ঘর তুলে বসবাস করেন। বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ ও দিনমজুরি করেই কোনো রকমে তাদের দিন চলে।

এই গ্রামে কোরবানি হয় না বললেই চলে। ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসনে ২০১২ সালে বৈদেশিক সাহায্যে গড়ে তোলা হয় গুচ্ছগ্রামটি। সেখানে ৩০টি গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়। কিন্তু জীবিকা নির্বাহের জন্য সরকারি কোনো সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

বর্তমানে এ গুচ্ছগ্রামে শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু বসবাস করেন। একদিন কাজ না করলে তাদের চুলায় আগুন জ্বলে না। অনেক সময় উপবাসে থাকতে হয়।

এ গ্রামের বাসিন্দা স্বামী পরিত্যক্তা আঙ্গুরি বেগম (৭০) দিনমজুরের কাজ করেই সংসার চালান। দুই ছেলে ও চার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বয়স্ক হলেও এখনো তাকে কাজ করে খেতে হয়। গুচ্ছগ্রামে মাথা গোঁজার ঠাঁই মিললেও এখনো জোটেনি সরকারি কোনো বয়স্ক বা বিধবা ভাতা, কিংবা অন্য কোনো সহায়তা। পুরো গ্রামের অবস্থা একই রকম।

গুচ্ছগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আলীসহ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এখানে বসবাস শুরুর পর দীর্ঘ এক যুগেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোরবানির মাংস। গত বছর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোরবানির মাংস দেওয়ার কথা বলে পরিচয়পত্রের ফটোকপি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপরেও তারা কিছুই পাননি।

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখবো।’