এডিপি বাস্তবায়নে এগিয়েছে সরকার

চলমান ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম সাত মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রায় ৫৪ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছে সরকার। যা গত অর্থবছরের এই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বেশি।

গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে সরকার এডিপিতে দেয়া বরাদ্দের মাত্র ৩৯ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছিল। যা ছিল ওই বছরের মোট বরাদ্দের ৩২ দশমিক ৪১ শতাংশ। কিন্তু এবার সাত মাসেই তা ছাড়িয়ে ৩৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।

বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয় করা গেছে। তবে, সার্বিক বরাদ্দের তুলনায় এখনও পিছিয়ে আছে বাস্তবায়ন।

চলতি অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকার এডিপি গ্রহণ করা হয়। অর্থাৎ অর্থবছরের সাত মাস চলে গেলেও বাস্তবায়ন ৩৩ শতাংশ। আর বাকি মাত্র ৫ মাসে প্রায় ৬৭ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব মো. মফিজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরের আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি এডিপি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। সাত মাসেই আমরা আগের অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয় করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, আমরা এডিপির বাস্তবায়ন বাড়াতে এবার অর্থবছরের শুরু থেকেই কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়ে এগুচ্ছি। যেমন বিশেষ করে বড় প্রকল্পগুলোর প্রতি বেশি নজর রাখা। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী ৩৫০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সরেজমিন পরিদর্শনেও যাচ্ছি আমরা।

এবার সংশোধিত এডিপি‘র প্রায় শতভাগ বাস্তবায়নের বিষয়ে আশাবাদী মফিজুল।

চলতি অর্থবছরের সাত মাসে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২৮ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা বা বরাদ্দের ৩০ শতাংশ, প্রকল্প সহায়তা খাত থেকে ২৩ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা বা প্রায় ৩৯ শতাংশ এবং নিজস্ব অর্থায়ন তহবিল থেকে ২ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা বা ৩৩ শতাংশ বরাদ্দ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।

এদিকে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের গড় বাস্তবায়ন ৩৭ শতাংশ। এই ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে মোট বরাদ্দের প্রায় ৮১ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়।

পণ্যের মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৮ শতাংশ বরাদ্দ বাস্তবায়ন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৪১ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

এরপর রয়েছে যথাক্রমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ৪০ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় ৩৮ শতাংশ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ৩৬ শতাংশ, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ ৩৫ শতাংশ, প্রাথমিক গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৩০ শতাংশ, নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয় ২৮ শতাংশ এবং সেতু বিভাগ ২৭ শতাংশ।

এদিকে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম মাত্র ১১ দশমিক ৬২ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ প্রায় ২৪ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য বিভাগ বরাদ্দের মা্ত্র ২২ দশমিক ৫২ ভাগ ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে।