‘এবারের নির্বাচনটা আগের মতো অত চ্যালেঞ্জিং নয়’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এ বারের নির্বাচনটা আগের মতো অত চ্যালেঞ্জিং নয়। বৈরিতার পরিবেশও নেই। বরং আমাদের স্বপক্ষে একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষ দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার ধানমন্ডিতে ব্যক্তিগত বাসভবন সুধা সদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সাক্ষাৎকার দেন।

আওয়ামী লীগ তরুণ সমাজের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এর আগের নির্বাচনগুলোয় একটা বিভেদ লক্ষ্য করতাম। এ বার কিন্তু একচেটিয়া ভাবে সকলের সমর্থনটা আমাদের সঙ্গে রয়েছে। সেটা টেরও পাচ্ছি।’

আগামী রোববার অনুষ্ঠিত হবে দেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমার বিপুল আস্থা। মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। জনগণের ভোটেই আমরা নির্বাচিত হব।’

আনন্দবাজারের হয়ে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সাংবাদিক অঞ্জন রায়। সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গত নির্বাচনের পরে বাংলাদেশে একের পর এক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ সে সব ভোলেননি। আর ভোলেননি বলেই ওই সব ঘটনা যে রাজনৈতিক দল ঘটিয়েছিল, তারা জনসমর্থনহীন হয়ে পড়েছে। আর সেই জোরের জায়গা থেকেই ফের সরকার গঠনের ব্যাপারে আশাবাদী আওয়ামী লীগ।

নির্বাচনের আগে বিরোধীদের নানা অভিযোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নালিশ করার পাশাপাশি বিভ্রান্তি ছড়াতে এবং মিথ্যা কথা বলতে ওরা ভীষণ পারদর্শী।’ শেখ হাসিনার দাবি, নির্বাচনে বিরোধীদের হয়ে যাঁরা প্রার্থী হতে চেয়েছেন, তাদেরই ওরা মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু দলীয় প্রতীক পেয়েছেন একজন। এর পর নিজেদের মধ্যেই সংঘাত শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশের যুব সম্প্রদায় আওয়ামী লীগ সম্পর্কে খুবই উৎসাহী বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। তাঁর মতে, বাংলাদেশে মানুষের মন থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছিল। এখনকার নতুন প্রজন্মের মধ্যে সত্যকে জানার আগ্রহ রয়েছে। ইন্টারনেটে খুঁজলেই একাত্তরের অনেক তথ্য এখন জানা যায়। ফলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার বিষয়টি এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর জেরে আওয়ামী লীগের প্রতি যুব সম্প্রদায়ের মতটাই পাল্টে গিয়েছে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, মানুষ অন্তর থেকে চাইছে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসুক। জনগণ এটা জানেন, আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই তাদের ভাগ্য পরিবর্তিত হবে।

এবারের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলাম কীভাবে ধানের শীষ প্রতীক পেল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শেখ হাসিনা। তাঁর প্রশ্ন, নির্বাচন কমিশন যাদের নিবন্ধন বাতিল করল, তাদের কী ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়? আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, ‘জামায়াত তো গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। মেয়েদের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া থেকে ঘরবাড়ি দখল করেছিল। ওদের মনোনয়ন দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মানুষ শঙ্কিত!’

ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সেই তিনি কিনা গেলেন জামাত-বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে!’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি অবাক হইনি। কারণ কী জানেন? ওনার শ্বশুরবাড়ি পাকিস্তানে। ছেলেদের একটু শ্বশুরবাড়ির প্রতি টানটা বেশি থাকে।’

ভোটের ফল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরাই আসছি। কারণ, মানুষ আমাদেরই চাইছে।’