এবার একরাতের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১২
সারা দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কুমিল্লা, নীলফামারী, চট্টগ্রাম, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা, দিনাজপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গায় ১২ জন নিহত হয়েছেন।
সোমবার দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
র্যাব ও পুলিশের দাবি- নিহতরা সবাই মাদককারবারির সঙ্গে জড়িত। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে মামলাও রয়েছে।
এর আগে রোববার দিবাগত রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযানে যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, নরসিংদী, টাঙ্গাইলে ও গাজীপুরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নয়জন নিহত হয়েছিল। তারাও মাদককারবারি বলে দাবি করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জানা গেছে, মাদকবিরোধী অভিযানকালে সোমবার রাতে কুমিল্লা ও নীলফামারীতে দুজন করে এবং নীলফামারী, চট্টগ্রাম, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা, দিনাজপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গায় একজন করে নিহত হয়েছেন।
কুমিল্লা : বন্দুকযুদ্ধে কুমিল্লায় শরীফ ও পিয়ার আলী নামে দুজন নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১টায় জেলা সদরের অদূরে বিবিরবাজার অরণ্যপুর (বাজগড্ডা) এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকা থেকে মাদকের একটি বড় চালান আসার খবরে পুলিশের একাধিক টিম ওই এলাকায় অবস্থান নেয়।
রাত পৌনে ১টার দিকে মাদক বিক্রেতারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
অভিযানে অংশ নেয়া ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম জানান, ঘটনাস্থলে শরীফ (২৬), পিয়ার আলী (২৮) ও সেলিম গুরুতর আহত হন।
তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার মাদক ব্যবসায়ী শরীফ ও পিয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের মধ্যে মো. শরীফ জেলা সদর দক্ষিণ উপজেলার মহেষপুর গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে।
অন্যদিকে নিহত পিয়ার আলী আদর্শ সদর উপজেলার শুভপুর গ্রামের আলী মিয়ার ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা : আলমডাঙ্গায় বন্দুকযুদ্ধে কামরুজ্জামান সাধু নামে একজন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দিবাগত রাতে আলমডাঙ্গা স্টেশনের অদূরে পুলিশের সঙ্গে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
নিহত কামরুজ্জামান আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী গ্রামের মৃত ইমদাদুল হকের ছেলে। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বন্দুকযুদ্ধে পর পর দুদিনে দুজন নিহত হলেন।
আলমডাঙ্গা থানা সূত্রে জানা গেছে, রাত ১টার দিকে আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে পুলিশ অভিযান শুরু করে। মাদকপাচারকারীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। বেশ কিছুক্ষণ গুলির লড়াইয়ের একপর্যায়ে পাচারকারীরা পিছু হটে। ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গার সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবীব বলেন, নিহত কামরুজ্জামান সাধুর (৪৫) বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে। তিন বছরের সাজাও হয়েছে তার। সম্প্রতি সাজা খেটে বাড়ি ফিরে আবারও মাদকপাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
এর আগে রোববার রাতে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলীর মাদক ব্যবসায়ী জনাব আলী পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এ দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় দুজন নিহত হলেন।
নীলফামারী : ডিমলা ও সৈয়দপুর প্রতিনিধি জানান, পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নীলফামারীর সৈয়দপুরে দুই মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন।
সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সৈয়দপুর উপজেলার বাইপাস মহাসড়কের গোলাহাট বধ্যভূমি এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সৈয়দপুর পৌর শহরের ইসলামবাগ মহল্লার আব্দুল হান্নানের ছেলে মো. জনি হোসেন (২৭) ও নিচু কলোনি মহল্লার ইউসুফ হোসেনের ছেলে শাহিন আহমেদ (৩০)।
সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল বলেন, নিহতরা এলাকার চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় আটটি করে মামলা রয়েছে।
চট্টগ্রাম : নগরীর বায়েজিদ থানাধীন ডেবারপাড় এলাকায় র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শুক্কুর আলী (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। র্যাব ৭-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিমতানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : জেলার বাঞ্ছারামপুরে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ধন মিয়া (৩৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন।
র্যাব-১০ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, র্যাব সদস্যরা মঙ্গলবার ভোররাতে বাঞ্ছারামপুরে উপজেলার সোনারামপুর এলাকায় অবস্থান নেন।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি মাদকের চালানসহ ধন মিয়া সেখানে পৌঁছলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলিবর্ষণ করলে র্যাবও পাল্টা গুলি করে। এ সময় বন্দুকযুদ্ধে তিনি নিহত হন। নিহত ধন মিয়া উপজেলার মরিচাকান্দি গ্রামের হোসেন মিয়ার ছেলে। তার স্ত্রী আরজিনা বেগমকে আটক করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন