এবার সৌদি সেনাবাহিনীতে শামিল হবে নারীরা
সৌদি আরবে সেনাবাহিনীতে এবার নারীদের নিয়োগ দেয়া হবে। সৌদি অর্থনৈতিক সংস্কার ‘ভিশন ২০৩০’-এর অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে নিয়োগের কাজ শেষ হতে দুই মাস লেগে যাবে বলে এক সৌদি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছে।
সৌদি জেনারেল সিকিউরিটি পরিষদের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নারীদের ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে রাজকীয় সেনাবাহিনীতে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। তবে এখনই দেশটির সব নারী সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারছেন না। রিয়াদ, মক্কা, আল-কুসাইম ও মদিনায় বসবাসরত নারীরাই অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, সৌদি আরবের প্রভাবশালী যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান দেশটিকে তেল নির্ভরতা থেকে মুক্ত করে অর্থনৈতিক খাতকে প্রসারিত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন। এজন্য ধর্মীয় রীতিনীতি ও সামাজিক সংস্কারে বেশ কিছু সরকারী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সরকারি ওই বিবৃতি উল্লেখ করে আল আরাবিয়ার খবরে লেখা হয়, প্রাথমিকভাবে নারীদের শুধু সৈনিক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এজন্য তাদের ১২টি শর্ত পূরণ করতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রার্থীকে অবশ্যই সৌদি বংশোদ্ভ‚ত হতে হবে, বয়সসীমা ২৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে হবে, উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হতে হবে। তবে অ-আরবীয় কোনো পুরুষকে বিয়ে করলে সে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের যোগ্যতা হারাবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া প্রার্থী কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না ও এর আগে সরকারি কোনো সংস্থায় কাজ করেনি সেটা নিশ্চিত হতে হবে। এরপর মৌখিক ও মেডিকেল পরীক্ষায় পাসের পর প্রত্যেককে সেনবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এ ছাড়া বিমানবন্দর ও সীমান্তে আরো প্রায় ১৪০টি পদে নারীদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার মধ্যে রয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়। এ ছাড়া চলতি মাসে দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর কার্যালয় প্রথমবারের মতো নারী তদন্তকারী নিয়োগ করতে যাচ্ছে। সৌদি আরবে সরকারি চাকরিতে এ বছর এক লাখ ৭০ হাজার নারী প্রার্থী আবেদন করেছে। দেশটির ইতিহাসে নারীদের এটাই সর্বোচ্চ আবেদনের সংখ্যা। ভিশন ২০৩০-এর অংশ হিসেবে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা ২২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে মোট জনশক্তির এক-তৃতীয়াংশ করার পরিকল্পনা করছে সৌদি সরকার।
নারী ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে দেশটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরুষের ‘অভিভাবকত্বে’র বিষয়টিকে শিথিল করতে চাইছে। এই অভিভাবক ব্যবস্থার আওতায় সরকারি সেবা পেতে কিংবা ভ্রমণে যেতে এমনকি স্কুলে ভর্তি হতে গেলেও নারীকে তার ‘অভিভাবকের’ কাছ থেকে পাওয়া অনুমতিপত্র দাখিল করতে হয়। এক্ষেত্রে অভিভাবক হন সাধারণত স্বামী, বাবা কিংবা ভাই।
তবে সৌদি আরব তার এই রক্ষণশীল চেহারা থেকে বের হয়ে আসতে চাইছে। এবার এরই অংশ হিসেবে নারীদের এককভাবে ব্যবসা করার অনুমতি দিয়েছে সৌদি সরকার। এর জন্য তাদের আত্মীয় সম্পর্কিত কোনো পুরুষের অনুমতির প্রয়োজন হবে না। আগে দেশটিতে কোনো নারীকে ব্যবসা করতে হলে পুরুষ অভিভাবক বা সঙ্গীর অনুমতি পত্র নেওয়ার প্রয়োজন হতো। গত সেপ্টেম্বরে নারীদের গাড়ি চালানো বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। আগামী জুলাই থেকে তা কার্যকর হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন