এশিয়া কাপ: বাংলাদেশ যে পাঁচটি জায়গায় পিছিয়ে পড়ছে
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল শেষ দুই ম্যাচে আফগানিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে যথাক্রমে ১১৯ ও ১৭৩ রানে অলআউট হয়ে যায়।
মূলত তামিম ইকবাল আঘাত পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে চলে যাওয়ার পর এই ব্যাটিংয়ে এই সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে বাংলাদেশ প্রায়শই এমন সংকটে ভুগছে, যে সিনিয়র ক্রিকেটাররা ভালো না খেললে সমষ্টিগতভাবে দল খারাপ করছে।
প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর কী কারণে বাংলাদেশ এশিয়া কাপে হঠাৎ পিছিয়ে পড়লো?
ঘরোয়া ক্রিকেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার তৈরি করছে না
বিবিসি বাংলা জানতে চায় বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল একজন কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের কাছে। তার মতে, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার তৈরিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
তিনি বলেন, “তামিম ইকবাল না থাকার ফলে পুরো ব্যাটিং ধ্বসে যাবে এটা মানা যায় না। সাকিব, মুশফিক ও রিয়াদের ওপর শুধু তাকালে হবে না।”
মি. সালাউদ্দিনের মতে, “আবার নতুনরা যেভাবে উঠে আসছে তাতে বড় মঞ্চের জন্য যে প্রস্তুত না সেটা বোঝা যায়। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুই এক ম্যাচ দেখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নামানো বুমেরাং হয়ে পড়ে।”
‘এ’ দলের কার্যক্রম কম
চলতি বছর বাংলাদেশে ‘এ’ দল পুনরায় খেলা শুরু করেছে। তবে দীর্ঘ বিরতি থাকায় কারা আসলে দলে সুযোগ পাওয়ার মতো আছে সেটা বিবেচনা করা কঠিন হয়ে যায়।
মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলছেন, “দলে অতিরিক্ত পরিবর্তন ইতিবাচক না। এতে ক্রিকেটার ও দল উভয়ের মধ্যে আস্থা থাকে না। কেউই ভবিষ্যৎ নিয়ে সুস্পষ্ট ভাবনা ছাড়াই ক্রিকেট খেলে ফলে চাপ থাকে।”
স্পিন বলে ভালো করছে না বাংলাদেশ
ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ মোট ১০টি উইকেট স্পিনারদের বিপক্ষে হারিয়েছে।
রশিদ খানের ৯ ওভারে ১৩ রান, মোহাম্মদ নবীর ১০ ওভারে ২৪, মুজিব উর রহমানের ৮ ওভার এক বলে ২২ রান নেয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
এর কারণ হিসেবে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন মনে করেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব ভালো মানের স্পিনারের বিপক্ষে খেলে না ব্যাটসম্যানরা। যথাযথ বল বিবেচনা, শট সিলেকশনে এখনো পিছিয়ে আছে তাই।
তিনি বলেন, “ঘরোয়া ক্রিকেটে যেসব উইকেট বল করা হয়, সেখানে বল নিচু হয়ে আসে, যথেষ্ট বাউন্স থাকে না। আর যারা বল করছেন তারা স্বভাবতই উইকেটের সুবিধা পান। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো অধিকাংশ সময়ই স্পোর্টিং উইকেটে হয়, সেখানে বল করার মতো বাংলাদেশে খুব কম স্পিনারই সক্ষম। যার প্রভাব ব্যাটিং এ পড়ছে।”
সিনিয়র ক্রিকেটারদের ব্যাক আপ না থাকা
প্রতিটা ক্রিকেটারের ব্যাক আপ হিসেবে যারা আছেন তারা খুব একটা ভালো করছেন না। জাতীয় দলে যারা পুনরায় বিবেচনায় আসছেন তারা ভালো ক্রিকেট খেলে দলে ফিরছেন না।
অন্যকেউ খারাপ করলে সেক্ষেত্রে ডাক পাচ্ছেন দলে।
মোহাম্মদ সালাউদ্দিন মনে করেন, প্রতিটা জায়গায় মানসম্মত ব্যাটসম্যান না থাকা ও সেই সাথে ব্যাক আপ না থাকা ক্রিকেটের জন্য খারাপ।
বাজে শট সিলেকশন
ভারতের বিপক্ষে ৩৩তম ওভারের মধ্যে সাকিব, মুশফিক ও রিয়াদ প্যাভিলিয়নে ফেরেন। এর পরিবর্তে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত নিজেকে প্রমাণের মঞ্চ পেয়েও ব্যর্থ হন।
রবীন্দ্র জাদেজার বলে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে এমএস ধোনির হাতে ‘কট বিহাইন্ড’ হন সৈকত।
তামিম ইনজুরিতে থাকায় যে দুজনের প্রমাণ করার সুযোগ ছিল সেই লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তও বাজে শট খেলে আউট হন।
এছাড়া সাকিব জাদেজার দু বলে দুটি বাউন্ডারি মারার পর স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন।
আর মুশফিক ৪৪ বল খেলে ২১ রান করার পর রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হন যা কিনা খেলার গতিপথের বিপরীতে।
-বিবিসি বাংলা
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন