ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আল্টিমেটাম দিলেন কাদের সিদ্দিকী
‘অসঙ্গতি’ দূর করার জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দকে এক মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন ফ্রন্টের অন্যতম শরিক কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।
তিনি বলেছেন, ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। এসব অসঙ্গতি ও কিছু প্রশ্নের উত্তর আগামী এক মাসের মধ্যে সুরাহা না হলে ৮ জুন ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাবে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কাদের সিদ্দিকী।
‘অসঙ্গতি’ নিয়ে ফ্রন্টের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অবহিত করেছেন জানিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার আলটিমেটাম দেয়ার আগে জোটের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের জোটের মধ্যকার অসঙ্গতির কথা বলেছি।
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের কিছু সিদ্ধান্তে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে নির্বাচনের নামে জঘন্য নাটক হয়েছে, যা শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর কোনো দেশেই এমন নাটকের নজির নেই। কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করার পরও গণফোরামের সুলতান মনসুর শপথ নিলে তাকে বহিষ্কার করা হয়। মোকাব্বির খান শপথ নিলে ড. কামাল হোসেন তাকে ‘গেট আউট’ বলেন। পরে দেখা যায় গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে মোকাব্বির খান উপস্থিত। এসব নিয়ে মানুষের মধ্য বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। মানুষ এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আমরা জবাব দিতে পারি না।
ঐক্যফ্রন্টের কার্যক্রমের আত্মসমালোচনা করে বঙ্গবীর বলেন, ঐক্যফ্রন্টের একাদশ নির্বাচনের পর অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন-পরবর্তী কিছু কিছু কাজে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তারা সঠিকভাবে চলতে পারেনি। নির্বাচনী সহিংসতায় আহত-নিহতদের পাশে দাঁড়াতে পারেনি ঐক্যফ্রন্ট। সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল শাহবাগে গণজমায়াত করতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। এসব বিষয় আমাদের জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। মানুষ এসবের উত্তর জানতে চায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার।
প্রসঙ্গত ভোট ডাকাতির অভিযোগ তোলে একাদশ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করা বিএনপির নেতৃত্বাধীন দুই জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোট একাদশ সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে অনড় থাকতে পারেনি জোটের শরিক বিএনপি ও গণফোরাম। দুটি দলের নির্বাচিত ৮ প্রতিনিধির মধ্যে সাতজন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন। জোটের শরিকদের অভিযোগ তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই প্রধান শরিক বিএনপি সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে করে পুনর্নির্বাচন দাবি করার নৈতিকভিত্তি নষ্ট হয়ে গেছে জোটের। এই অভিযোগে সোমবার ২০-দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যায় আন্দালিভ রহমান পার্থের বিজেপি। আরও কয়েকটি দলেরও জোট ছাড়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টেও ভাঙনের সুর লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন