কক্সবাজারে রোগীর মৃত্যুর জেরে চিকিৎসককে মারধর

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে সিসিইউতে ভর্তি এক রোগীর মৃত্যুর জেরে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে। এ সময় আইসিইউ, সিসিইউসহ হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে কাজে না ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসক, নার্সসহ সব ধরনের কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সিসিইউতে ভর্তি থাকা কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া এলাকার আবদুল আজিজ নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়।

স্বজনদের অভিযোগ, ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করার পরই তার মৃত্যু হয়। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে হাসপাতালের ভেতরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তার স্বজনরা। একপর্যায়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সজিব কাজিকে মারধর করা হয়। চালানো হয় ভাঙচুর।

হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জাহিদুল মোস্তফা জানিয়েছেন, জটিল সংকটাপন্ন রোগীকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পরও কয়েকজন যুবক চিকিৎসককে ব্যাপক মারধর করে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। ভাঙচুর চালানো হয় আইসিইউ, সিসিইউসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে। নিয়ে যাওয়া হয় নানা সরঞ্জামও। আহত চিকিৎসককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরায় ঘটনার একটি ফুটেজে দেখা যায়, চারজন যুবক চিকিৎসক সজীবকে ধরে মারধর করছে। একপর্যায়ে চিকিৎসক জ্ঞান হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। ফুটেজে হামলাকারী দুইজনকে ইতিমধ্যে শনাক্তও করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আসিফ ও মেহেদী নামে এই দু’জন রোগীর স্বজন না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার নুরুল হুদা বলেন, যদি নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে কোনো স্টাফই কাজে ফিরবে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা নিশ্চিত করতে হবে। কথায় কথায় চিকিৎসকসহ স্টাফদের উপর হামলা হচ্ছে। তাতে সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। তারপর সেবা।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (প্রশাসন) ডা. জি. আর. এম জিহাদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সমাধানে আলোচনায় বসেছে চিকিৎসক-নার্স ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বৈঠকটিতে সিদ্ধান্ত না আসলে অনির্দিষ্টকালের কর্ম-বিরতিতে যেতে পারে হাসপাতালের দায়িত্বরতরা।