চড়া দামে ভাটা : কমেছে পেঁয়াজের ঝাঁঝ, সবজি বাজারেও স্বস্তি

বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতের সবজি। ফলে চড়া দামে দেখা দিয়েছে ভাটা। নতুন পেঁয়াজ আসার আগেই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম কমেছে প্রায় ২০ টাকা। এ ছাড়া সরবরাহ বাড়ায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমেছে।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ চৌধুরী পাড়া এবং খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের আগাম সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, ঝিঙা, পটল, করলা, ঢেড়স, ধুনদল, চিচিংগা, বেগুন এখন বাজারে ভরপুর। এ ছাড়া লাল শাক, ডাটা শাক, পাট শাক, মুলা শাক, পুই শাক, লাউ শাকের কমতি নেই বাজারে। সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে পালন শাক ও নতুন আলু।

তবে নতুন আলু ও পালন শাকের দাম বাড়তি। প্রতিকেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। আর পালন শাক বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা আটি দরে।

গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কমার দিকে থেকে সবার ওপরে রয়েছে শিম। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিটির দাম কেজিতে কমেছে প্রায় ৪০ টাকা। বাজার ও মানভেদে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।

এদিকে হঠাৎ করে দাম বেড়ে ৯০ টাকা ছুয়ে ফেলা দেশি পেঁয়াজের দাম কমে ৬০ থেকে ৭০ টাকয় নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে কমেছে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও। প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি।

খিলগাঁও তালতলা বাজারের ব্যবসায়ী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ১০ থেকে ১৫ দিন পর বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসবে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার প্রক্রিয়াধীন থাকায় অনেক ব্যবসায়ী মজুদ করা পেয়াজ বাজারে ছেড়ে দিচ্ছেন। যে কারণে দাম কিছুটা কমে গেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকারও বেশি কমেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে। প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা। গাজরের দাম কমে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি।

শীতের আগাম সবজি ফুলকপির দাম ৫ টাকার মতো কমে প্রতি পিচ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। তবে কিছুটা বেড়েছে বাঁধাকপির দাম। গত সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ টাকা পিচ বিক্রি হওয়া বাঁধাকপির দাম বেড়ে হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

এদিকে গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পটলের দাম কমে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। করলার দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ঝিঙে, চিচিংগা, ধেড়স, ধুনদলের রয়েছে একই দামে।

তবে বেগুনের দাম কিছুটা বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিচ বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম একই রয়েছে। কাঁচামরিচও আগের মতোই ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আগের সপ্তাহের মতোই লাল শাক ও সবুজ শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। পুইশাক বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে। তবে ১০ টাকা আটি দরে বিক্রি হওয়া মুলা শাকের দাম বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা। আর লাউ শাকের দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরেই রয়েছে।

সাদা ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের মতোই ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম কিছুটা কমলেও মাছের দাম রয়েছে বেশ চড়া। চাষের কই, সিলভারকাপ ও পাঙ্গাস ছাড়া কোনো মাছ ২০০ টাকা কেজি দরের নিচে মিলছে না। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে। ছোট নলা মাছের দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা, কাচ্চি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাপদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, চষের কই ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, ছোট সিলভারকাপ ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জামাল বলেন, বাজারে শাক-সবজি ভরপুর থাকায় দাম কিছুটা কমেছে। সামনে বৃষ্টি না হলে দাম আরও কমবে। তবে এখন বাজারে যে হারে সবজির সরবরাহ রয়েছে, দাম সেই হারে কমেনি।