কর্ণফুলী নদী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরও কাজ না হওয়ায় এবার কর্ণফুলী নদী রক্ষার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কর্ণফুলী নদী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

অর্থনীতির চালিকাশক্তি এ নদীর দূষণরোধে শিল্প কলকারখানায় ইটিপি স্থাপনের ওপরও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। নদীসংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, প্রধানমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরে কর্ণফুলীর দখল ও দূষণমুক্ত করার কার্যক্রমে গতি আসবে।

পলি জমে কর্ণফুলী নদীর বুকে জেগেছে বিশালাকৃতির কয়েকটি চর। ফলে জাহাজ চলাচলে হুমকির মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেল। আর বহাল তবিয়তে এখনো দুই পাড়ে রয়ে গেছে দুই হাজার অবৈধ স্থাপনা। প্রতিনিয়ত কলকারখানার রাসায়নিক ও গৃহস্থালির পয়োবর্জ্য দূষিত করছে নদীর পানি।

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণ কর্ণফুলী যখন নানামুখী দখল আর দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে মরতে বসেছে তখনই নদীরক্ষার নির্দেশ দিলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কর্ণফুলী, হালদা ও সাঙ্গুসহ যে কয়টি নদী রয়েছে এগুলো যাতে কোনোভাবেই দূষণের শিকার না হয় সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। বিশেষ করে কর্ণফুলী নদীর দিকে আমাদের আলাদা দৃষ্টি দিতে হবে। প্রতিটি শিল্পকারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি।’

রাসায়নিক দূষণ থেকে নদীকে রক্ষায় শিল্পকারখানায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া দূষণ বহুগুণ বাড়াচ্ছে ৬০ লাখ নগরবাসীর গৃহস্থালির বর্জ্য। নদীটিকে বাঁচাতে জনপ্রতিনিধিদেরও ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবার উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা উচ্ছেদ করলাম পরে আবার দখল হয়ে গেল, তাহলে তো উচ্ছেদ করে কোনো লাভ নেই।’

হাইকের্টের নির্দেশের পরও নানা সংস্থার গাফিলতির কারণে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন ধরে। তবে প্রধানমন্ত্রীর কড়া বার্তায় গতি পাবে এমন মত নদী রক্ষা কমিটির।

এ ব্যাপারে নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি আলিউর রহমান বলেন, ‘কর্ণফুলী হচ্ছে দেশের অর্থনীতির সঞ্চালক। দেশের অর্থনীতির ৯২ শতাংশ খাত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্ণফুলীর ওপরে নির্ভরশীল।

উল্লেখ্য, অতি দূষণে ৩৫ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পাশাপাশি ইতোমধ্যে কর্ণফুলী নদীর প্রশস্ততা কমেছে প্রায় ৫০০ মিটার। ভরে গেছে ২০ শতাংশ নদীর তলদেশ।