কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে চায় সরকার: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে চায় সরকার। এজন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ৫০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কন্যা শিশুর শিক্ষা, বাল্যবিয়ে নির্মূলসহ নারীর প্রতি যে কোনো ধরনের বৈষম্য নিরসনের আইন প্রণয়ন ও আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
দীপু মনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অন্যতম অর্জন লিঙ্গবৈষম্য কমিয়ে নারীর ক্ষমতায়নের পথে এগিয়ে থাকার উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ। এ বিষয়ে বাংলাদেশের স্থান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার ওপরে। কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশ্বের সব দেশের ওপরে বাংলাদেশের স্থান।
মন্ত্রী বলেন, আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে থাকবে বাংলাদেশ। খাদ্য নিরাপত্তা, নিরাপদ পানি, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই পরিবেশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়দি পরিকল্পনা ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ গ্রহণ করা হয়েছে। সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বিশ্বের সব উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে উড়বে বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা।
শিক্ষা ক্ষেত্রে দেশে নারীর অগ্রযাত্রার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ব্যানবেইসের বাংলাদেশ এডুকেশন স্ট্যাটিসটিকস ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী মাধ্যমিকে পর্যায়ে মোট শিক্ষার্থী ৫৫ দশমিক ৭ শতাংশ নারী। উচ্চমাধ্যমিক ৫০ মাধ্যমিকে ২৭ শতাংশ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ৩৫ দশমিক ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী মেয়ে। মাদরাসা শিক্ষা পর্যায়ে মোট ৫৫ দশমিক ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী নারী।
তিনি আরও বলেন, ব্যানবেইসের ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৮ বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে মেয়েদের পাসের হার আড়াই গুণ বেড়েছে। ১৯৯০ সালে ৩০ শতাংশ মেয়ে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় পাস করেছিল। ২০১৯ সালে পাস করেছে ৮৩ শতাংশের বেশি মেয়ে। ১৯৯০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় পাস করেছিল ৩১ শতাংশ মেয়ে। আর ২০১৯ সালে পাস করেছে প্রায় ৭৫ শতাংশ মেয়ে।
নারী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট হতে স্নাতক ও সমমান পর্যায়ে অগ্রাধিকারভিত্তিতে ৭৫ শতাংশ নারী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের মাধ্যমে ২০১২-১৩ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত স্নাতক ও সমমান পর্যায়ে নয় লক্ষ ৭১ হাজার ৮৭৬ জন নারী শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি বাবদ ৪৭৬ কোটি ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৭০০ টাকা দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল পাঁচ নারীকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এবার জয়িতা পদক-২০২২ পেয়েছেন মোছা. সানজিদা আক্তার শিমু, ড. হোসনে আরা আরজু, খোশনাহার বেগম, জেসমিন আক্তার ও মোছাৎ রোকেয়া বেগম।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- মহিলা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ডা. আ.এ.মো. মহিউদ্দিন ওসমানী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন