কলাপাড়ায় পুত্রবধূ করে নেওয়ার প্রলোভনে প্রবাসি নারীর বিপুল অর্থ আত্মসাৎ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রবাসী নারীকে পুত্রবধূ করে নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৮ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রতারক পরিবারের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী ওই নারীকে পুত্রবধূ হিসেবে সংসার জীবন উপহার দেয়ার কথা থাকলেও এখন বিয়ের পর অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আর স্বীকৃতি দিচ্ছে না পরিবারটি।

আর স্থানীয়রা বলছেন, লোভী পরিবারটি ওই নারীর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়ে উল্টো ভুক্তোগীকেই হুমকি দিচ্ছে।

ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা মোসাঃ রুমা ইসলাম, পারিবারের আর্থিক সঙ্কট মেটাতে পাড়ি জমান সৌদি প্রবাসে। বেশ কয়েক বছর কর্মজীবন কাটানোর পর বিয়ে করে সুখেই জীবনযাপন করছিলেন। এরই মাঝে স্বামী স্ত্রীর মাঝে দাম্পত্য কলহ শুরু হলে সমঝোতা করতে ছুটে আসেন স্বামীর রুম পার্টনার মেহেদী হাসান। আর এখানেই বাধে বিপত্তি। স্বামীর পরিচিতজন এবং কাছের মানুষ হিসেবে মেহেদীর বাড়িতেও যোগাযোগ শুরু হয় রুমার। আর এই কলহের সুযাগ নিয়ে মেহেদীর পরিবার জেকে বসেন রুমার সংসারে। পরে অতি আদরে যতনে স্বজনেরা প্রস্তাব দেন প্রথম স্বামীকে রেখে মেহেদীকে বিয়ে করার জন্য।

এসময় মন ভোলানো কথায় সায় দিয়ে চলতি বছরের ৮ মার্চ মেহেদীকে বিয়ে করেন প্রবাসী ওই নারী। মেহেদী হাসান উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির পশ্চিম গইয়াতলা গ্রামের আবুল হোসেন মিয়ার ছেলে।

ভুক্তভোগী নারী জানান, স্বামীর সাথে মনমালিন্য মিট করার বিষয় নিয়ে মেহেদীর পরিবারের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর থেকে মিমাংসা না করে উল্টো স্বামীর কান ভারি করে কৌশলে আমাকে বিয়ে করে মেহেদী। কিন্তু এখন টাকা নেয়ার পর আবার একটা বিয়ে করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, বিয়ের নামে একটা ফাঁদ পেতে আমার সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়েছে পরিবারটি। মেহেদীর বাবা,মা,ভাই বোন সবাই আমাকে তাদের বাড়ির পুত্রবধূ করে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে সে এমনি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন দেশে আমার বৃদ্ধ মাকে মারধর করার হুমকি দিচ্ছে। শুধু তাই নয় লোভী পরিবারটি বয়সে ছোট ছেলেকে আমার সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য নবীজীকে উদহারণ দিয়েছে। এখন আর টাকাও ফেরৎ দিচ্ছে না।

স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম জানান, যে ঘটনা মেহেদীর পরিবার ঘটিয়েছে এটা জঘন্য একটি কাজ। এলাকার মানুষের মাঝে ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে। আমার সাথে মেহেদীর বাবা তিন লাখ টাকা ফেরৎ দেয়ার কথা বলেছে। তবে এক টাকাও দেয়নি।

স্থানীয় বাসীন্দা জসিম জানান, ওই নারীর সাথে বিয়ের সময় ভাই হিসেবে আমি ছিলাম। মেহেদীর ভাই রাজু আমাকে ভাই সাজিয়ে বিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, পরিবারটি একটি প্রতারক চক্র। এছাড়াও শতাধিক মানুষের অভিযোগ, টাকা হাতানোর জন্য প্রবাসী নারীর সাথে বিয়ের নাটক করে অন্যায় করেছে পরিবারটি। এদিকে একটি ভয়েজ ম্যাসেজে শোনা যায়, মেহেদী ওই নারীকে হুমকি দিয়ে বলছেন, টাকা ফেরৎ দিবে তো নাই উল্টো তার মাকেই মারধর করবেন তিনি।

এবিষয়ে সরেজমিনে জানতে চাইলে মেহেদীর বাবা এবং ভাই দ্রুত বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে মেহেদীর মা সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলেকে ওই নারীর সাথে বিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে তার ছেলের দ্বিতীয় বিয়ের খবর তিনি জানেন না। এছাড়া অন্য কাজের জন্য টাকা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জসীম জানান, এবিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।