কলারোয়ায় জমজমাট পিঠা উৎসব, পিঠাপুলির মধুর ঘ্রাণে মুখরিত স্কুল প্রাঙ্গণ
শেখ জিল্লু,কলারোয়া: গ্রামবাংলার শীতের আলাদা ঐতিহ্য রয়েছে। আর দেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান গ্রামীণ সংস্কৃতির পিঠাপুলি। শীত এলেই পিঠাপুলি খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। সেই পিঠাপুলির মধুর ঘ্রাণেই মুখরিত হলো কলারোয়া সরকারি জিকেএমকে পাইলট বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) এ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হলো দিনব্যাপী পিঠা উৎসব।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আয়োজিত প্রথমবারের মতো এ পিঠা উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উৎসবের প্রধান অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহুরুল ইসলাম।
সংগীতের মূর্ছনার সঙ্গে বর্ণিল আবহে আয়োজিত দিনব্যাপী এ পিঠা উৎসব উৎসবমুখরতা ছড়িয়ে দেয় সবখানে।
সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহুরুল ইসলাম, উপজেলা বিনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক অধ্যক্ষ আবু বক্কার সিদ্দিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল কাদের বাচ্চু, কলারোয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শরিফুজ্জামান তুহিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, উপজেলা বিনপির প্রচার সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক প্রভাষক সালাউদ্দিন পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক এমএ হাকিম সবুজসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ বাহারি ও সুস্বাদু বিভিন্ন পিঠার স্টল ঘুরে দেখেন।
প্রধান অতিথি হাবিবুল ইসলাম হাবিব গ্রামবাংলার লোকজ ঐতিহ্য তুলে ধরার এই প্রয়াসকে দেশপ্রেম হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, কালের বিবর্তনে শীতের পিঠা-পুলির ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে। নানা ধরনের পিঠাপুলির সাথে এ প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে। আধুনিক জীবনধারার বিপরীতে গ্রামীণ পিঠা উৎসবের আয়োজন আমাদের মাটি ও মানুষের কাছে নিয়ে যায়। জাতি হিসেবে তুলে ধরা যায় আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে। নতুন প্রজন্মের তরুণরা এ জাতীয় লোকজ উৎসবের মধ্য দিয়ে দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হবে নিঃসন্দেহে।
একই অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব জিকেএমকে পাইলট হাইস্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহুরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে তরুণরা গ্রামবাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরে গ্রামীণ পিঠা উৎসবের আয়োজন করতে পারে, তা ভাবা যায় না। আমরা মনে করতাম এ গ্রামীণ ঐতিহ্য তাদেরকে টানে না। কিন্তু তারা প্রমাণ করলো দেশের সংস্কৃতিকে তারাও শিখরে তুলতে চায়।
আয়োজনের বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ তামিম আজাদ মেরিন বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উপলক্ষে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয। শিক্ষার্থীদের মাঝে গ্রাম বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য তুলে ধরতে এবারই প্রথম এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হলো।
বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিভিন্ন শ্রেণি ও বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ১১টি স্টলে বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৫০ পদের শীতকালীন পিঠা শোভা পায়। পিঠার স্টলগুলোর নামকরণও বেশ নজরকাড়া। যেমন: কনজ পিঠা, স্বপ্ন পিঠা, মায়ের হাতের পিঠা, নাইম্স বেকারির পিঠা, নবান্ন, পিঠা পারিজাত, মধুমাখা পিঠা, সোনালি ধানের ছোঁয়া, বাংলার স্বাদ পিঠাঘর, গ্রামবাংলার পিঠাঘর, পিঠার পসরা। পিঠা স্টলে পুলি পিঠা, দুধ পুলি, পাটিসাপটা, নকশি পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, জামাই পিঠা, গোকুল পিঠা, নারকেল পিঠা, রসের পিঠাসহ হরেক রকমের পিঠার পসরা বসে।
দিনভর নানা পদের ও স্বাদের বাহারি পিঠার স্টলে উপচে পড়া ভিড় এবং দর্শনার্থীদের আগ্রহ এক ভিন্ন মাত্রা পায়। সবমিলিয়ে পিঠা উৎসব এক প্রাণের মেলায় রূপ নেয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন