কলারোয়ায় লক্ষ্মীখোলা খাল পুনঃখননে পানির সুবিধা পাবে ২২০০ পরিবার

কৃষকদের চাষাবাদে পানির চাহিদা পূরণ ও এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রাচীন ব্রিটিশ আমলে খনন করা হয় সাতক্ষীরা কলারোয়ার লক্ষ্মীখোলা নিশিন্দীতলা খাল। এই খালটি দীর্ঘদিন খনন অভাবে পলিমাটি জমে কচুরিপানায় ভরে গেছে। যা এখন এই অঞ্চলের জলাবদ্ধতার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মরা খালটি পুনঃ খননের উদ্যোগ নিয়েছে নেদারল্যান্ড দূতাবাসের আর্থিক সহযোগিতায় সফল ফর আই ডব্লিউ আর এম (সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা) প্রকল্পের আওতাধীন সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া ও এর সহযোগী সংস্থা উত্তরণ।

লক্ষ্মীখোলা নিশিন্দীতলা খাল পুনঃখনন কার্যক্রম এর আনুষ্ঠানিকভাবে শুভ উদ্বোধন করেন কলারোয়া উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রধান অতিথি আমিনুল ইসলাম লাল্টু।

বৃহস্পতিবার ( ৬ জুন ) সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলার কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের লক্ষ্মীখোলা নিশিন্দীতলা খাল পুনঃখনন কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন লক্ষীখোলা নিশিন্দাতলা মাইক্রো ওয়াটারসেড কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও কুশোডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদ আলী গাজী।

সলিডারিডাড সূত্রে জানা যায়, এই লক্ষ্মীখোলা নিশিন্দীতলা খালটি লক্ষ্মীখোলা, কুশোডাঙ্গা, পিছলাপোল, মেহমানপুর, রায়টা, সাগদাহ, কলাটুপি এ ৭টি গ্রামের মানুষের ফসলের জমি সহ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই খালটি পুনঃখনন সম্পন্ন হলে প্রকল্পের ৮৫০ জন কৃষকসহ অঞ্চলের ২২০০ পরিবার উপকৃত হবেন। স্থানীয় কৃষকদের মধ্য থেকে ২১ জন সদস্যবিশিষ্ট লক্ষ্মীখোলা নিশিন্দীতলা মাইক্রো ওয়াটারসেড কমিটির ১০টি দল রয়েছে যারা এই খালটির পুনঃ খনন হওয়ার পরে পানি ব্যবস্থাপনার দেখা শোনা করবেন। যাতে পুনরায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়। এ অঞ্চলে প্রধান ফসলের মধ্যে ধান, পাট, সরিষা, সবজি ও মাছ চাষ হয়। এ অঞ্চলের প্রায় ৬০০ বিঘা জমিতে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত জলাবদ্ধতার কারণে আমন মৌসুমের ধান চাষাবাদ করতে পারে না। খালটি পুনঃ খনন সম্পন্ন হলে এই ক্ষতি কাটিয়ে কৃষকেরা বাড়তি ফসল উৎপাদন করতে পারবে অন্যদিকে কৃষিতে সেচের খরচ কমে যাবে।

এই খালটির গড় দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছে ১.৮৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ২০ ফুট ও গড় গভীরতা ৭ ফুট। এই খালের ক্যাচমেন্ট এরিয়া প্রায় ৮ কিলোমিটার।

এ সময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসফিকা হোসেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি ) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল- ইমরান, উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জিয়াউল হক, লক্ষ্মীখোলা নিশিন্দীতলা মাইক্রো ওয়াটারসেড উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আহসান হাবীব, মাইক্রো ওয়াটারসেড কমিটির সভাপতি নওশের আলী।

এ সময় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া সফল ফর আইডব্লিউআরএম প্রকল্পের খুলনা রিজিওয়নের প্রজেক্ট ম্যানেজার কৃষিবিদ মোস্তফা নূরুল ইসলাম, সফল ফর আইডব্লিউআরএম প্রকল্প, উত্তরণ খুলনা রিজন ম্যানেজার কৃষিবিদ ইকবাল হোসেন, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া সফল ফর আইডব্লিউআরএম প্রকল্পের সাতক্ষীরা প্রোগ্রাম অফিসার রিজেনএগ্রি এন্ড সিএসএ মো: মশিউর রহমান, ওয়াটার ক্লাস্টার অফিসার উত্তরণ শেখ মিজানুর রহমান,, ওয়াটার ক্লাস্টার ফেসিলেটেটর খোকন কুমার, গাজী তৌহিদুজ্জামান , তাহমিনা সহ স্থানীয় এলাকার কৃষক- কৃষাণী, সুবিধাভোগী, সুধীমহল, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।