কাতারে পশ্চিমা হস্তক্ষেপ চায় আরব আমিরাত
জঙ্গিবাদে সমর্থন প্রত্যাহারে বাধ্য করতে কাতারে পশ্চিমা বিশ্বের পর্যবেক্ষণ সংস্থার হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নকারী ৯ দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনো দেশ বাইরের হস্তক্ষেপের কথা জানাল।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনোয়ার জারগাস বলেছেন, তাদের মিত্র সৌদি আরব, মিসর ও বাহরাইন কাতারকে বিশ্বাস করে না। কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ব্যাপারে সমর্থন আদায়ের লক্ষে লন্ডনে সফরকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আনোয়ার জারগাস বলেন, এটা আচরণগত পরিবর্তনের ব্যাপার। আমরা যদি দেখি যে কাতার পরিবর্তিত হতে যাচ্ছে এবং জঙ্গিদের সমর্থন ও অর্থায়ন বন্ধ করে দিচ্ছে, তবে আলোচনা হতে পারে। তারপরও একটি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বিশ্বাস করি না। তাদের প্রতি বিশ্বাসের মাত্রা শূন্যের কোঠায়। আমরা মনে করছি, একটা পর্যবেক্ষণ সংস্থা দরকার। এক্ষেত্রে আমাদের পশ্চিমা বন্ধুরা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছি।’
আমিরাতের এই মন্ত্রী বলেন, ‘কাতার যে জঙ্গিবাদে অর্থায়ন করছে না, মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থন করছে না, হামাস কিংবা আল কায়েদাকে সমর্থন করছে না; সেটা পর্যবেক্ষণ সংস্থা নিশ্চিত করবে।’
এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব কাতার ইস্যুতে যেভাবে পশ্চিমা সমর্থন প্রত্যাশা করেছিল, তা পাচ্ছে না। অনেক দেশ কাতারের সঙ্গে ৯টি দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের বিষয়টি ভাল চোখে দেখছে না। তবে কাতারবিরোধী জোটের বিশ্বাস, কাতারের শাসন ক্ষমতা পরিবর্তনে তাদের (সম্পর্ক ছিন্নকারী দেশগুলো) প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন রয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকট নিরসনে বিভিন্ন দেশ; বিশেষ করে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কুয়েত এবং তুরস্ক মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে। তবে জারগাস বলেছেন, নির্দিষ্ট করে কারো প্রতি কোনো অনুরোধ নেই।
কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের ১১ হাজার সেনা মোতায়েন আছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দুটি যুদ্ধজাহাজ কাতারের বিমানবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নেয়ার জন্য দোহায় পৌঁছেছে। এফ-১৫ যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ১২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিও হয়েছে। অন্যদিকে সৌদি আরবের সঙ্গে একশ ১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি করেছেন ট্রাম্প।
আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাতারের সঙ্গে এটা কোনো ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক বিরোধ নয়। এটা তাদের পররাষ্ট্রনীতির কারণে হয়েছে। আমরা আর কতো সহ্য করতে পারব। বাধ্য হয়ে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) থেকে একযোগে তাদের বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আনোয়ার জারগাস বলেন, ‘২০১৪ সালে একবার কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি নিয়ে কিছু করতে গিয়ে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। বিচ্ছিন্নতার ব্যাপারে অামি উদ্বিগ্ন; আরও বেশি উদ্বিগ্ন কাতার নিয়ে। কাতারের সঙ্গে আগে আমরা নরম হয়ে কথা বলেছি, এখন শক্ত হাতে কথা বলা দরকার।’
গত কয়েক বছরে জঙ্গিবাদ, উগ্রপন্থা আরও বেড়েছে। এখন সময় এসেছে জঙ্গিবাদ থামানোর।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন