কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে ৫ মাসে রাজস্ব আয় সাড়ে ১৩ কোটি টাকা
চলতি মৌসুমের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি কাপ্তাই হ্রদ থেকে আহরিত ৬ হাজার ৬৪১ মেট্রিক টন মাছের শুল্কায়ন হয়েছে। এ সময় জেলার চারটি মৎস্য অবতরণকেন্দ্র থেকে শুল্ক বাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৩ কোটি ৬৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার এই কাপ্তাই হ্রদ। এই লেকের আয়তন প্রায় ৭,২৫ বর্গ কিলোমিটার। দেশের মিঠা পানির মাছের অন্যতম উৎস। এখানে কাচকি, চাপিলা, কাজলী, আইর, রুই, কাতল সহ প্রায় ৭০-৮০ প্রজাতির মাছ রয়েছে। সমতল জেলাগুলোতে এ কাপ্তাই লেকের সুস্বাদু মাছের চাহিদা বেশি।
তবে অবতরণ ঘাটগুলোতে আনা মাছের প্রায় ৯৫ শতাংশই চাপিলা, কাচকি, আইড় আর কাজলী।
এসব মাছ আনা হয় রাঙামাটি সদর, কাপ্তাই, মারিশ্যা ও মহালছড়ি এই চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে। সেখানে পরিমাপ ও শুল্কায়ন শেষে এসব মাছ যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
প্রজনন মৌসুমে ২৫ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত চলা নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে নিবন্ধিত প্রায় ২৭ হাজার জেলে মাছ শিকার করেন।
গেল মৌসুমে চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাট থেকে সাড়ে ৭ হাজার টন মাছ থেকে ১৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এবার ৮ হাজার টন মাছ থেকে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা শুল্ক বাবদ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের রাঙামাটি অফিস।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) রাঙ্গামাটি অঞ্চলের হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভুঁইয়া জানান, চলতি মৌসুমের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত জেলার চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে সাড়ে ৬ হাজার ৬৪১ মেট্রিক টন মাছ অবতরণ হয়েছে। যেখান থেকে শুল্কায়ন বাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৩ কোটি ৬৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, এই মৌসুমে হ্রদে এখনো পানি অনেক বেশি। এখন বেশি ধরা পড়ছে কাচকি, চাপিলা, কাজলী, আইড় মাছ। শীত মৌসুমে বড় জাতের মাছ পানির গভীরে থাকে বিশেষ করে (ডিসেম্বর , জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি) এ মাস গুলোতে কার্প জাতীয় মাছ কম পাওয়া যায়। পানি কিছুটা কমে আসলে কার্প জাতীয় বড় মাছও পাওয়া যাবে।‘
তিনি বলেন, কাপ্তাই হ্রদ ড্রেজিং করা অত্যন্ত জরুরি। পলি জমে তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় হ্রদটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে। জেলার পাঁচটি উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র সংযোগ স্থল এই কাপ্তাই লেক। কাপ্তাই লেক ড্রেজিং করা গেলে হ্রদের নাব্যতা ফিরবে, মৎস্য উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে, নৌ যোগাযোগের সংকট নিরসন হবে। সেই সাথে এই জেলায় কাপ্তাই লেক নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষের ভাগান্তি কমবে অনেকাংশে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন