কারাগারে বসে ১৪ সদস্যের দল গঠন, জামিন পেয়ে শুরু ডাকাতি-ছিনতাই
কেউ ডাকাতি, কেউ ছিনতাই কেউ আবার অস্ত্র মামলার আসামি হয়ে গিয়েছিলেন কারাগারে। পরিচয় সেখানেই। কারাগারে বসেই দাগি আসামিদের নিয়ে ১৪ সদস্যের দল গঠন করেন চক্রটির সেকেন্ড ইন কমান্ড আপেল হাজি।
জামিনে বের হয়ে শুরু করেন ডাকাতি ছিনতাই।
পুলিশ বলছে, দলটির আধ্যাত্মিক নেতা শহীদ মাঝিই প্রথম ডিবি পরিচয়ে অপকর্ম শুরু করে। তার অনুসারীরাই এখনো রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপরাধ চালিয়ে আসছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের আট সদস্যকে গ্রেফতার করে। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দলটি দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করত। তদন্তে বেরিয়ে আসতে থাকে দলটির সদস্যদের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ডাকাতির চিন্তা প্রথম মাথায় আসে শহীদ মাঝির। এক যুগ আগে তিনি ভুয়া ডিবি পরিচয়ে শুরু করেন ডাকাতি। এখনো যারা ডিবি পরিচয়ে নানা রকম অপরাধ করে সবাই শহীদ মাঝিকে তাদের আধ্যাত্মিক নেতা বা গুরু মানেন। বেশ কয়েকবার আইনের ফাঁক ফোকর পেরিয়ে চলে যান আন্ডারগ্রাউন্ডে।
এই লাইনে শহীদ মাঝির যোগ্য উত্তরসূরি এসি রানা। আসল নাম হেলাল হোসেন রানা। একটি বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত রানার নেতৃত্বেই চলতে থাকে ছিনতাই ডাকাতি। পুলিশ একসময় রানাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। জামিনে বেরিয়ে তিনিও চলে যান আন্ডারগ্রাউন্ডে।
আধ্যাত্মিক গুরু শহীদ মাঝি আর রানা নতুন পরিকল্পনা করেন। কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কারাগারে থাকা ১৪ মামলার আসামি মোজাম্মেল হোসেন আপেল হাজির সঙ্গে কয়েক দফা দেখা করেন তারা। পুরো কনসেপ্টটি বুঝিয়ে বলেন আপেলকে। কারাগারে এবং জামিনে থাকা ১৪ জনের একটি টিম তৈরি করেন আপেল হাজি।
কারাগার থেকে বের হয়ে আপেল হাজি অপারেশনাল কমান্ডার এবং লোকবল জোগানদাতা হিসেবে দায়িত্ব দেন জাহাঙ্গীর আলমকে। জাহাঙ্গীর আগে থেকেই চারটি চোরচক্রের প্রধান।
অস্ত্র সরবরাহ ও ডাকাতি করা মালামাল বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয় মজিবর রহমান মজিদ ওরফে মোক্তারকে। মানিকগঞ্জে স্বর্ণ ডাকাতি ও অস্ত্র মামলায় বেশ কয়েকবার জেল খাটার রেকর্ড রয়েছে তার।
অস্ত্রধারী হিটম্যান হিসেবে নিয়োগ পায় জমির খান। গাড়িচালক ও তথ্য জোগানদাতা মাসুম গাজী। কুদ্দুস আলী অর্থ জোগানদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। পাহারাদের দায়িত্বে থাকত কাউসার মিয়া ও শফিকুল খরাদী।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, যারা সরাসরি বাস ডাকাতের সঙ্গে জড়িত এরকম একটা গ্রুপ পেয়েছি। এ ছাড়া আরেকটা গ্রুপ পেয়েছি বিভিন্ন ব্যাংকে ভুয়া ডিবির কথা বলে ব্যাংক আওয়ারে সরাসরি অপারেশন্সের সঙ্গে জড়িত। তারা শুধু ডাকাতির সঙ্গে জড়িত নয় বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে ডজন খানেক মামলাও রয়েছে।
এর বাইরেও এক চক্রটির আরোও বেশ কয়েকজন সদস্য পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
সূত্র: সময় নিউজ
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন