কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার অনিশ্চিত

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আবারো অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিদায়ী বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সর্বশেষ চেষ্টাও কাজে আসেনি। সদ্য বিদায়ী বছরে বড়দিনের উপহার হিসেবে কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি ঢাক-ডোল পিটিয়ে তিনি প্রচার করেছিলেন। কিন্ত সেটি করতে পারেননি। মন্ত্রনালয়ে নতুন মন্ত্রী শাজাহান কামাল এ বিষয়ে কিছু জানার আগে মুখ খুলতে নারাজ। ফলে আবারো গভীর অনিশ্চয়তায় পড়েছে কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি। যদিও বৃটিশ প্রতিনিধিরা বার বার বলেছেন, খুব দ্রুত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশের সঙ্গে আকাশপথে সরাসরি কার্গো পরিবহন স্থগিত করে যুক্তরাজ্য। পরে ওই বছরের ২১ মার্চ পরামর্শ, নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও জনবল প্রশিক্ষণের জন্য দেশটির বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রেডলাইন এ্যাসিউরড সিকিউরিটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে বেবিচক। এ চুক্তির এক বছর পেরিয়ে গেলেও আরোপিত সরাসরি কার্গো পরিবহন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। সর্বশেষ গত বছরের ১৬ নভেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ পরিদর্শন করে ব্রিটিশ প্রতিনিধি দল। পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দলটি বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার কথা বলে গিয়েছিলেন। এরপর দীর্ঘ পরিক্রমায় বেবিচক প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়নি।

এ বিষয়ে বেবিচক এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাঈম হাসান বলেন, আমরা এখন আর দিন তারিখ বলবো না। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হবে বলে আমরা আশা করছি। কাণ তাদের (যুক্তরাজ্যের) সব শর্ত আমরা পূরণ করেছি।

যুক্তরাজ্যে সরাসরি কার্গো পরিবহন বন্ধ থাকায় গত অর্থবছরে এ খাত থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিমানের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এয়ারলাইন্সটি উড়োজাহাজের কার্গো হোল্ডের মাধ্যমে ৪০ হাজার ৯১১ টন মালপত্র পরিবহন করেছে। এর মাধ্যমে বিমানের আয় হয়েছে ৩১৫ কোটি টাকা, যা ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ছিল ৩৯২ কোটি টাকা। বর্তমান পরিস্থিতিতে কার্গো সেবার পরিধি বাড়াতে দুটি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে বিমান। এর আওতায় বিমানের গ্রাহকদের মালপত্র ১৩টি রুটে পৌঁছে দিচ্ছে একটি এয়ারলাইন্স। আর ইউরোপের ১৫টি রুটে বিমানের হয়ে পণ্য পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে অপর এয়ারলাইন্স।

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ জানান, নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্গো সার্ভিস থেকে বিমানের আয় কমেছে। তবে সার্বিকভাবে বিমান মুনাফা করেছে। নিষেধাজ্ঞা না থাকলে মুনাফার পরিমাণ আরও বাড়ত। সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে চেষ্টা করছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে অনিশ্চয়তা কাটবে এবং বিমানের আয় আরও বাড়বে বলে আশা করছি।