ট্রাম্প-কিমের ঐতিহাসিক বৈঠক ১২ জুন সিঙ্গাপুরে

অবশেষে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১২ জুন সিঙ্গাপুরে তাদের মধ্যে এ বৈঠক হবে। বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন। উত্তর কোরিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া তিন মার্কিনিকে স্বাগত জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরই কিমের সঙ্গে বৈঠকের এ দিনক্ষণ ঘোষণা করেন ট্রাম্প। খবর: বিবিসি, সিএনএন ও আলজাজিরা।

টুইট বার্তায় ট্রাম্প লিখেছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে তার শীর্ষ বৈঠকটি হবে সিঙ্গাপুরে, ১২ জুন। বৈঠকটি যেন বিশ্বশান্তির জন্য একটা অনন্য মুহূর্ত হয়ে ওঠে, সে চেষ্টা আমরা করব।’

শীর্ষ বৈঠকটির লক্ষ্য হবে ওয়াশিংটন এবং পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা কমিয়ে আনা। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির একটা সম্ভাব্য সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা করা।

উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা তাদের পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেবে এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিও স্থগিত করবে।

অবশ্য উত্তর কোরিয়ার এই অবস্থান বদলে ট্রাম্প প্রশাসন দেশটির ওপর জাতিসংঘের কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপকেই বারবার কৃতিত্ব দিয়ে আসছে।

তবে উত্তর কোরিয়া বলেছে, তাদের প্রশাসন এখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিয়েছে বলেই আগের অবস্থান থেকে সরে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকা কোনো প্রেসিডেন্ট আজঅব্দি উত্তর কোরিয়ার কোনো নেতার সঙ্গে বৈঠক করেননি। গত মার্চে ট্রাম্প নজিরবিহীনভাবে কিমের সঙ্গে বৈঠকের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বিশ্বকে হতবাক করে দেন।

এর আগে দু’নেতার মধ্যে বহু হুমকি-ধামকি আর বাকযুদ্ধে কোরিয়া উপদ্বীপের পরিবেশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।

কিন্তু, সম্প্রতি উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলার পরই পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম কোরিয়া উপদ্বীপ পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করতে রাজি হন। গত ২৭ এপ্রিলে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক শীর্ষ বৈঠকও হয়।

এরপরই ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের বৈঠকের প্রস্তুতি শুরু হয়, যা হয়তো ১২ জুন আলোর মুখ দেখবে।

এর আগে উত্তর কোরিয়ায় আটক থাকা তিন আমেরিকান নাগরিকের মুক্তির পর তাদের ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

অ্যান্ড্রুজ বিমান ঘাঁটিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি মুক্তি পাওয়া কিম হাক সং, টনি কিম ও কিম ডং চোলকে দারুণ মানুষ বলে অভিহিত করেন।

তাদের মুক্তির পেছনে ভূমিকা রাখাকে ট্রাম্প সম্মানের বলেও উল্লেখ করেন। মুক্তি পাওয়া তিনজনের দু’জন উত্তর কোরিয়ায় ইভানজেলিকাল খ্রিস্টানদের প্রতিষ্ঠিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কাজ করতেন। তৃতীয় ব্যক্তি ছিলেন একজন খ্রিস্টান যাজক।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র পিয়ংইয়ং সফরকালে তাদের মুক্তি দেয়া হয়।