কিশোরগঞ্জের ধানের শীষ প্রার্থীরা দৃশ্যত অবরুদ্ধ

কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনেই চলছে ব্যাপক হামলা, মামলা ও গ্রেফতার অভিযান। শুধুমাত্র গত তিন দিনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শরীফুল ইসলাম ও কটিয়াদী পৌরসভার সাবেক মেয়র উপজেলা বিএনপির সভাপতিসহ জেলার ১৩টি উপজেলার শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থক আটক হয়েছেন। এদেরকে নাশকতার পরিকল্পনা এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব পালনে বাধা কিংবা হামলা অভিযোগ এনে গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে সোপর্দ করা হচ্ছে।

লাঠিসোটা নিয়ে হামলার পাশাপাশি ঘটেছে গুলির ঘটনা। আর এসব হামলার ঘটনার সময় ভৈরবে অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ জেলায় নারী পুরুষসহ অর্থ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছেন।

প্রতিপক্ষ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন রুদ্র রোষ থেকে খোদ ধানের শীষ প্রার্থীরাও রক্ষা পাচ্ছে না। প্রতিপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় ইতিমধ্যে কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব – কুলিয়ারচর) আসনের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত নিএনপি দলীয় প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি কেন্দ্রীয় নেতা মো. শরীফুল আলম এবং কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন গুরুতর আহত হয়ছেন।

এসব মামলা হামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কের মধ্যে দৃশ্যত কিশোরগঞ্জ -২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া), কিশোরগঞ্জ -৪ (ইটনা, মিটামন,অষ্টগ্রাম), কিশোরগঞ্জ – ৫ (বাজিতপুর -নিকলী) ও কিশোরগঞ্জ – ৬ (ভৈরব -কুলিয়ারচর) আসনের ধানের শীষ প্রার্থী দৃশ্যত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অবরোধের মুখে রয়েছেন বলে যুগান্তরের কাছে অভিযোগ করেছেন এসব আসনের ধানের শীষের প্রার্থীরা।

এর আগে জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ -১ (সদর-হোসেনপুর) আসনের ধানের শীষ প্রার্থী সাবেক ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ রেজাউল করিম খান চুন্নু, কিশোরগঞ্জ – ২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া)আসনের প্রার্থী মেজর (অব.)আখতারুজ্জামান রঞ্জন, কিশোরগঞ্জ -৪ ((ইটনা,মিটামন,অষ্টগ্রাম) আসনের প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, কিশোরগঞ্জ – ৫ (বাজিতপুর -নিকলী) আসনের প্রার্থী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি কেন্দ্রীয় নেতা শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল ও কিশোরগঞ্জ -৬ (ভৈরব -কুলিয়ারচর) আসনের প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি কেন্দ্রীয় নেতা মো. শরীফুল আলম সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ পরিস্থিতি অবহিত করেন।

কিশোরগঞ্জ – ৫ আসনের ধানের শীষ প্রার্থী শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাজিতপুর উপজেলার সরারচর গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করার সময় পুলিশ ও বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন তার বাড়ি ঘিরে রাখে এবং এ সময় বাড়ির গেট থেকে এক নেতাকে আটক করে।

এমনকি এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয়া এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধিকে বিজিবি গাড়িতে তুলে নেয়ার চেষ্টা করলে তিনি পরিচয়পত্র দেখিয়ে রক্ষা পান।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ছয়টায় মুঠোফোনে পাওয়া সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ধানের শীষ প্রার্থী শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালের বাড়ি ঘেরাও করে মুহুর্মুহু গুলি ছুঁড়ায় সরারচর বাজারের আতঙ্কগ্রস্ত লোকজন দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করে নিজেদের প্রাণ বাঁচায়। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদে চলে যান।

এ ব্যাপারে কথা হলে বলতে বাজিতপুর থানার ওসির সরকারি নাম্বারে ফোন করা হলে তার ফোন রিসিভ করেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেন, ওই বিএনপি প্রার্থীর বাড়ির কাছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এখানে একটি বিদ্যুতের স্পর্শকাতর স্হাপনা থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সখানে বিজিবি যায় এবং গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।