কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন প্রযুক্তি আসক্তি?
মানুষ দিনে গড়ে ১৫০ বার মুঠোফোন দেখেন। হয় কল করেন, ওয়েব ব্রাউজ করেন, ফেসবুকে কিছু পোস্ট করেন, কিংবা শুধুই অভ্যাসের বশে পকেট থেকে বের করে সময় দেখেন। ১৫০ সংখ্যাটি এত বেশি যে আঁতকে উঠতে হয়। আবার কাজের খাতিরেই মুঠোফোন সঙ্গে রাখতে হয়, ব্যবহার করতে হয়। তাহলে আসক্তি আর প্রয়োজনের মধ্যে ব্যালান্স করবেন কীভাবে? সংবাদনির্ভর ওয়েব পোর্টাল ‘ফাস্ট কোম্পানি’ এমন পাঁচজন মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, যাঁরা একসময় মুঠোফোনে আসক্ত ছিলেন, তবে পকেটে মুঠোফোন রেখেই সে আসক্তি তাঁরা কাটিয়ে উঠেছেন। সেই পাঁচজনের অভিজ্ঞতা থাকছে এখানে।
চোখ-কান বন্ধ করে মুছে ফেলুন
২০১২ সালের দিকে গুগল ভেঞ্চারের সাবেক ডিজাইন পার্টনার জ্যাক ন্যাপের আইফোন ব্যবহার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এতটাই বেশি যে শিশুসন্তানদের সময় দিতে পারছিলেন না। এদিকে মুঠোফোন ব্যবহার বন্ধ করাও সম্ভব ছিল না। তখন তিনি ভেবে দেখলেন টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবের মতো অ্যাপগুলোতেই বেশি সময় ব্যয় করছেন। দ্বিতীয়বার চিন্তা না করে অ্যাপগুলো মুছে ফেলেন। নিজেকে পরীক্ষার জন্য নেওয়া সে পদক্ষেপ ছয় বছর পর আজও দিব্যি বলবৎ আছে।
ব্যবহার কমানোর জন্য বড় ডিভাইস
নিজের স্মার্টফোন আসক্তি সম্পর্কে নিজেকে সতর্ক করতে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছিলেন এনভিশনিং টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা মিশেল জাপ্পা। তিনি আইফোনের বদলে ব্যবহার শুরু করেন আইপ্যাড মিনি। এতে আইফোনের সব সুবিধা আছে, শুধু কল করা যায় না। তবে আকারে বড় হওয়ায় আইফোনের মতো স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারতেন না। যখনই হাতে আইপ্যাড তুলে নিতেন, তাঁর মনে হতো যে সময় নষ্ট করছেন। খুব দরকার না পড়লে ট্যাব ব্যবহার করা বন্ধ করে দেন। পরে ট্যাব ছেড়ে আইফোনে ফিরে গিয়েছিলেন, তবে ব্যবহারে সচেতনতা বেড়েছিল অনেক।Eprothomalo
ব্যবহার কঠিন করে তুলুন
গ্রাফিক ডিজাইনার সারাহ লরেন্সের মতে, প্রথম পদক্ষেপ হলো ‘মোমেন্ট’-এর মতো অ্যাপ ইনস্টল করা। স্বাভাবিকের চেয়ে স্মার্টফোন বেশি ব্যবহার শুরু করলেই এই অ্যাপ ব্যবহারকারীকে মনে করিয়ে দেয়। একই সঙ্গে দিনে কতবার ফোন ব্যবহার করছেন, তা-ও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে। নিজের ওপর আরেকটি পরীক্ষা চালান সারাহ। দুই সপ্তাহ স্বাভাবিক রঙে এবং পরের দুই সপ্তাহ ফোনের পর্দা সাদাকালো করে ব্যবহার শুরু করেন। তিনি দেখলেন, পর্দা সাদাকালো করে রাখলে অযথাই যখন-তখন মুঠোফোনের ব্যবহার কমে যায়।
রেখে আসুন অন্য ঘরে
এক থেরাপিস্টের পরামর্শ মেনে কোনো ঘরে ঢোকার আগে মুঠোফোন আরেক ঘরে ফেলে আসা শুরু করেন ইয়োনি রেখটম্যান নামের বিনিয়োগকারী। মূলত ফোন থেকে দূরে থাকাই ছিল উদ্দেশ্য। প্রথমে হয়তো ১৫ মিনিটের জন্য, পরে সময়টা ধীরে ধীরে বাড়াতে বলেন তাঁর থেরাপিস্ট। ইয়োনি বলেন, ‘আমি এ কাজটি এখনো পুরোপুরি রপ্ত করে উঠতে পারিনি, তবে আগের চেয়ে অনেক ভালো আছি।
ভূমিতেই এয়ারপ্লেন মোড
সপ্তাহ কয়েকের জন্য ইনস্টাগ্রাম অ্যাপ মুছে ফেলেন ফাস্ট কোম্পানির সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার জন কনভার্স টাউনসেন্ড। একই সঙ্গে প্রতি রাতে নিজের স্মার্টফোনের এয়ারপ্লেন মোড চালু করে রাখতে শুরু করেন। বন্ধুদের অনুরোধে আবারও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার শুরু করেন, তবে এখনো প্রতি রাতে ফোনে এয়ারপ্লেন মোড চালু রাখতে ভোলেন না। এতে অন্তত ঘুমের ব্যাঘাত বন্ধ হয়ে যায়।
সূত্র: ফাস্ট কোম্পানি
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন