কী থাকছে জাতীয় ঐক্যের ঘোষণায়?

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’ গঠনের ডাক দিয়ে আলোচনায় যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নারা।

নির্বাচনকে সামনে রেখে ধাপে ধাপে এগোচ্ছে তাদের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঘোষণা হতে যাচ্ছে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’ গঠনের রূপরেখা।

শুক্রবার সকালে তোপখানা রোডে মাহমুদুর রহমান মান্নার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করে দফা, লক্ষ্য ও দাবির সমন্বয়ে এই রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। যুক্তফ্রন্টের নয় দফা আর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ৭ দফা সমন্বিত করে একটি অভিন্ন রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে।

শনিবার বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে জাতীয় ঐক্যের আনুষ্ঠানিক রূপরেখা তুলে ধরা হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অনুমতিও চাওয়া হয়েছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার পক্ষ থেকে। সেখানে অনুমতি না মিললে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকেই এই ঘোষণা দেয়া হবে।

রূপরেখার মধ্যে রয়েছে- একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনের আগে বর্তমান সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন (নির্বাচনের এক মাস আগে এবং নির্বাচনের ১০ দিন পর পর্যন্ত দায়িত্বে নিয়োজিত রাখতে হবে), প্রধানমন্ত্রীর নিরঙ্কুশ ক্ষমতা খর্ব করা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সুশাসন, দুর্নীতি দমন এবং ক্ষমতার ভারসাম্য আনাসহ নির্বাচন ও সরকার সংক্রান্ত আরও কিছু বিষয়।

এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরেই আমাদের এই ঐক্য প্রক্রিয়াটা শুরু হচ্ছে। কিভাবে একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন করা যায় এবং আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলছি। যাতে ক্ষমতায় যারা যাবে তারা যেন স্বেচ্ছাচারী না হয়ে উঠে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনের আগে বর্তমান সংসদ ভেঙে দেয়াসহ সর্বোপরি ক্ষমতার ভারসাম্য ও সুশাসনের বিষয়গুলো রূপরেখায় অবশ্যই থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বৃহত্তর ঐক্য গড়তে একটা জায়গায় আমাদের পৌঁছাতে হবে। সেই জায়াগাটা আমার নির্ধারণ করেছি। সেটা হলেই আমারা বৃহত্তর ঐক্যের দিকে আরও অগ্রসর হতে পারব।’

কর্মসূচির বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই মাসটা গণসংযোগ করব। খুলনায় ১৮ সেপ্টেম্বর আর চাঁদপুরে ১৯ সেপ্টেম্বর আমরা সমাবেশের অনুমতি পেয়েছি।’

‘আমরা এই বার্তাটা দিতে চাই যে, আমরা ভিন্ন কিছু করতে যাচ্ছি। এটা যদি জনগণ বিশ্বাস করে, তাহলে আমাদের সঙ্গে আসবে। এজন্য আমরা গণসংযোগে যাচ্ছি’ যোগ করেন সাবেক এই ছাত্র নেতা।

জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, ‘আমার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার দাবি নিয়েই আমরা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় বৈঠক করে খসড়া প্রস্তবনা তৈরি করেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া জড়িত নেতারা।

পরে লিখিত লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করতে ঐকমত্যে পৌঁছেছি।’