কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর ভাঙ্গনে দিশেহারা বড়ভিটা ইউনিয়নের মানুষজন

বাবার কবর গেল, মায়ের কবর গেল,চোখের সামনে ঘর-বাড়ি গেল। আমরা এখন পরের জমিত থাকি। আইজ একটাই থাকি তো কাইল আরেকটাইÑ এই কথাগুলো কান্না জড়িত কন্ঠে বলেছিলেন ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধরীরাম ধরলা নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার সোনাউল্লা(৬০)।

শুধু সোনাউল্লা নয় ঐ গ্রামের আকলিমা(৫৮), শরীয়ত (৬২) সহ অনেকেই ভাঙ্গনে বিপর্যস্ত। তাই ভাঙ্গন প্রতিরোধে মানববন্ধন ও সমাবেশে শামিল হয়েছিলেন। তাদের একটাই দাবি “নদী বান্দী দ্যাও (ভাঙ্গন রোধ), হামরা গুলা আর ঠিকানা বদল করব্যার চাইনা”।

নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের দুর্দশা লাঘবে কুড়িগ্রাম জেলা উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে রোববার বিকেলে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার সকালে ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধরীরাম ধরলা নদী তীরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ সভাপতি ও স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক পরিচালক ডাঃ শাহাদত হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি মাহবুব মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক সাইয়েদ আহমেদ বাবু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ।

স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রকিবুল হাসান বাঁধন, ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, ছাত্রনেতা হামিদুল ইসলাম প্রমুখ। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু বলেন, ধরলা নদীটি ভারত থেকে এসে বাংলাদেশের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কর্ণপুরে প্রবেশ করে। এই নদীটি অশ্ব ক্ষুদ্রাকৃতির মতো।

নদীটি কর্ণপুর থেকে ফুলবাড়ী উপজেলা, কুড়িগ্রাম সদর ও উলিপুরের বুড়া-বুড়ি ইউনিয়নের ব্রম্মপুত্রে পতিত হয়। কিন্তু এই ৪৫ কি.মি. পথে ফুলবাড়ীর গোরক মন্ডপ, বড়ভিটার পশ্চিম ধনীরাম, ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের মেকলি, রাঙ্গামাটি, সারডোব এলাকা সহ অনেক এলাকার বসতভিটা নদীগর্ভে ভাঙ্গনে চলে যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে কুড়িগ্রাম জেলায় ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের ৩৩ টি পয়েন্টে ভাঙ্গন চলছে। এই ভাঙ্গন প্রতিরোধে সরকারকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। সেই সাথে পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মতো চর বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে চরের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধান চান।