কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিছিন্ন চরে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, আনন্দিত চরবাসী

কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত চরের শিশুরা যেন শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয় বিষয়টি চিন্তা করে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিছিন্ন সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের কালির আলগা চরে উপজেলা প্রশাসন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। কালির আলগা চরটিতে প্রায় ৩ হাজার ৫০০শ মানুষের বসবাস।

এখানে কোন বিদ্যালয় না থাকায় গত ২-৩ বছর ধরে এই চরের প্রায় ৪০০-৫০০ শিশু বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি। যার কারণে একটি বিদ্যালয় নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়ে। বিকেলে কালির চরে সদর উপজেলার সকল দপ্তরের অফিসারদের উপস্থিতে স্কুলটি উদ্বোধন করা হয়। এছাড়াও চরে বসবাসকারী ব্যক্তিদের বিভিন্ন ফলের ৫০০টি চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

অপর দিকে স্কুলগামী শিশুদের বেশ কিছু গল্পের বই, শিশুদের খেলার জন্য ফুটবল, হ্যান্ডবল, ক্রিকেট সেট ও জাম্পিং দড়ি উপহার দেয়া হয়েছে।

কালির আলগা চরের শিহাব নামের এক শিশু বলে, আমাদের চরে স্কুল হয়েছে। আমি খুব খুশি। এই স্কুলে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করবো।

কালির আলগা চরের বাসিন্দা রহিম মিয়া বলেন,
আমাদের এখানে কোন স্কুল নাই। অনেকে প্রাথমিকের গন্ডি পেরোতে পারছে না। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে দূরের স্কুলে ছেলে মেয়েদের পাঠানো যায় না। যার কারণে মেয়েরা বাল্য বিবাহের সংখ্যা বেড়েই চলছে।

এখানে স্কুল হয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। এখন থেকে চরের শিশুরা এখানে লেখাপড়া করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, আজ যেভাবে উপজেলার সকল দপ্তরের অফিসাররা চরে এসে আমাদের চরের মানুষের সমস্যার কথা শুনলেন। এমন অনুষ্ঠান আমার জীবনে দেখি নাই। চরবাসীর পক্ষ থেকে তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মুশফিকুল আলম হালিম বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে স্মার্ট চর এর মাধ্যমে চরের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন করা। এরই ধারাবাহিকতায় এখানে উপজেলা প্রশাসন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও কালির আলগার চরের মানুষ যেন বন্যায় কষ্ট না পায় সে লক্ষ্যে বাড়ি ভিটে উচুঁকরণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বন্যার সময় এই চরে কেউ মারা গেলে দাফন করা যেতো না। মরদেহ নিয়ে যেতে হতো নৌকা যোগে যাত্রাপুরে। এমন মানবিক কষ্ট লাঘবে আমরা এখানে একটি উঁচু স্থানে কবরস্থান করেছি।

অনুষ্ঠানে চরা লের মানুষের জীবনযাত্রা উন্নয়নে চরা লের মানুষের সুখ-দুঃখের কথা শুনে তাদের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। স্কুলটির উদ্বোধন শেষে ফুটবল, মোরগ লড়াই ও দড়ি লাফ খেলার আয়োজন ও পুরষ্কার বিতরণ করা হয়েছে।