কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে বিলের মাঝে বাঁধ দিয়ে পুকুর খনন, জলা বদ্ধতায় পানির নিচে ৩শ বিঘা জমি
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে জয়মনির হাট ইউনিয়নের ভেরভেরি বিল ও বাউসমারী বিলের মাঝখানে বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরী করায় প্রায় দেড় শতাধিক ব্যক্তির ৩০০ বিঘা জমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চলতি আমন মৌসুমের শেষ পর্যায়েও ধানের চারা লাগাতে নাপারায় বিপাকে পড়েছেন। এসকল জমি মালিকগণ বিচারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। কিন্তু সমাধান মিলছেনা।
জানাগেছে, জয়মনিরহাট ইউনিয়নে অবস্থিত ভেরভেরি বিলের পানি পার্শ্ববর্তী বাউশমারী বিলে দিয়ে বকনী নদীতে গিয়ে পড়ে। সম্প্রতি ঐ এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হবিবর রহমান ও তার ছোট ভাই শাহাদত হোসেন মাস্টার ভেরভেরি বিল ও বাউসমারী বিলের মাঝখানে বাঁধ তৈরী করে মাছ চাষ শুরু করে। এরফলে দীর্ঘদিন থেকে ভেরভেরি বিলের পানি প্রবাহের রাস্তা বন্ধ হওয়ায় বাঁধের উজানে প্রায় ৩ শত বিঘা জমি তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এর ফলে ঐ জমি মালিকগণ আমন ধানের চারা লাগাতে নাপারায় বিপাকে পড়ে।
ভূমি মালিক রইচ উদ্দিন, আব্দুল মজিদ,শরিফুল আলম ও যোবায়ের হোসেন জানান, জমি গুলো তলিয়ে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত রোপা চারা লাগাতে পারি নাই। ধানের আবাদ নাহলে না খেয়ে মরতে হবে।
বাঁধ দেয়ায় দুই বিঘা জমি পানির নিচে এখনো এক গোছা ধান লাগাতে পারি নাই। ধান না লাগালে পেটে পাথর বান্দি থাকা লাগবে বিধবা মালেকা বেগম (৫৫) এভাবে আকুতি জানিয়ে ঘটনার সমাধানের জন্য অনুরোধ জানালেন।
স্থানীয়রা জানান, এলাকাবাসীর পক্ষে ৪৪ জন ব্যক্তি স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার , কৃষি অফিসার ও থানার ওসির নিকট দিলেও এখন পর্যন্ত বিষয়টির সমাধান না হওয়ায় আমরা ধান চারা লাগানো নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছি।
এব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা হবিবর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি ধান ও মাছ চাষের জন্য বাঁধ দিয়েছি। তারপরও ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শে পানি নিস্কাশনের জন্য পুকুরের পারের নিচ দিয়ে পাইপ বসাতে সম্মত হয়েছি। কিন্তু পরে তারা যোগাযোগ করেন।
জয়মনিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদূদ জানান, বাঁধ নির্মাণের সময় আমি সরেজমিনে গিয়েছিলাম। তখন তারা পাইপ বসানোর জয়গা রেখে বাঁধ নির্মার্ণের কথা দিয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে কথা রাখছেনা। তিনি জানান, এই বাঁধের ফলে শতশত বিঘা জমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহ মোঃ আপেল মাহমুদ জানান, এব্যাপারে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাসহ আমরা উভয় পক্ষকে ডেকে মিমাংসার চেষ্টা করেছি কিন্তু সমাধান করা সম্ভব হয়নি। এবিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে।
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিন জানান, অভিযোগ পাবার পর আমরা জিডি করে ঘটনাস্থলে তিন দফা পুলিশ পাঠিয়ে মিমাংসার চেষ্টা করেছি এবং এখনো চেষ্টা চালাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপক কুমার দেব শর্মা জানান, অভিযোগ পাবার পর এটি সামাধানের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন