কুড়িগ্রামে অভাবের তাড়নায় ১ দিনর সন্তানকে অন‍্যের হাতে তুলে দিলেন বাবা

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে অভাবের তাড়নায় ১ দিনের কন‍্যা সন্তানকে অন‍্যের হাতে তুলে দিলেন বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নের গনাইরকুটি গ্রামে। ওই গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম বেগম(৩০) একদিন আগে একটি কন‍্যা সন্তানের জন্ম দেন।

অভাবের সংসারে সন্তানের ভরণ পোষণ দিতে না পারার শঙ্কায় ১ দিন বয়সী সন্তানকে শনিবার সকালে প্রতিবেশি এক মামাত বোনের হাতে তুলে দেন।এটি ওই দম্পতির পঞ্চম সন্তান বলে জানাগেছে।

এলাকাবাসী নাজমুল, শহিদুল ও আকবর আলী জানান, শফিকুলের নিজস্ব কোন জমি ও ঘর বাড়ি নেই। অন‍্যের বাড়িতে থাকে। স্থলবন্দরে পাথর ভাঙা শ্রমিকের কাজ করে খুব কষ্ট করে সংসার চালায়। এই লোকের বর্তমানে তিনটি বাচ্চা আছে। এই নিয়ে দুটি মেয়ে বাচ্চা দত্তক দেয়।

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ১৩ বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। কয়েক বছর পর আরো একট ছেলের জন্ম হয়। এর পর আমার স্ত্রীর টাইফয়েড জ্বর হয়। তার পর থেকে স্ত্রী কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এর কিছু দিন পরে আরো একটি কন‍্যা সন্তান জন্ম নিলে সেটাকে এক প্রতিবেশির কাছে দত্তক দেই। পরের বছর চতুর্থ কন‍্যা সন্তান জন্ম নেয়।

ওই মেয়ের বয়স এখন ৩ বছর। এর পর গত শুক্রবার পঞ্চম সন্তান জন্ম নিলে শনিবার সকালে প্রতিবেশি এক নিঃসন্তান মামাতো বোনকে দেওয়ার জন‍্য ওই মামার হাতে তুলে দেই।

শফিকুল আরো জানান, আমি সোনাহাট স্থলবন্দরে পাথর ভাঙ্গা শ্রমিকের কাজ করি। আমার থাকার কোন ঘর নাই। অন‍্যের বাড়িতে আশ্রিত থাকি। এই সামান‍্য আয় দিয়ে অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা, তিন সন্তানের ভরণ পোষণ ও সংসারের খরচ চালানো আমার পক্ষে সম্ভব না। তাই বাধ্য হয়ে বুকের ধনকে অন‍্যের হাতে তুলে দিয়েছি।

শিশুকে দত্তক নেওয়া পরিবারের সদস‍্য আকবর আলী জানান, আমার মেয়ে ‘নিঃসন্তান হওয়ায় শিশুটিকে দত্তক নিয়েছি। আমার মেয়ে ঢাকায় থাকে।

ইউপি সদস‍্য মনোয়ার হোসেন জানান, পূর্বে একটি সন্তান দত্তক দেওয়ার কথা জেনেছি। আজকের তথ‍্য আমার জানানেই। তবে লোকটা খুব অভাবী।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম ফেরদৌস জানান, বিষয়টি আমার জানানেই। তবে খোঁজ খবর নিবেন বলে তিনি জানান।