কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি,পানিবন্দি ৮০ হাজার মানুষ

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়ে পড়েছে নতুন নতুন এলাকা জেলার ৫টি উপজেলার ২১ টি ইউনিয়নের ২ শতাধিক গ্রাম এখন পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পানি বন্দী হয়ে পড়েছে অন্তঃত ২০ হাজার পরিবারের ৮০ হাজার মানুষ।

অব্যাহত ভারী বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমিটার এবং হাতিয়া পয়েন্ট বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে,কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি,পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার এবং শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ধরলার পানি সামান্য হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বন্যার পানি প্রবেশ করায় জেলায় শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।এত করে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।বন্যার পানিতে প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

নদ-নদী তীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চলের বসতভিটায় পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েছে মানুষজন । অনেক পরিবার গবাদিপশু সহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। অনেক পরিবার গবাদিপশু সহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এছাড়াও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে, আমন বীজতলা, পাট ও মৌশুমী ফসলের ক্ষেত। কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাষীদের। আকষ্মিক বন্যার ফলে গবাদিপশু ও শিশুদের নিয়ে বিপাকে পরেছে মানুষ। নলকুপ ও লেট্রিন তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পরেছে বানভাসী মানুষ। ঠিকমতো রান্নাবান্না করতে না পেয়ে একবেলা খেয়েই বাকীটা সময় পার করছে তারা।
উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতিতে তাৎক্ষনিকভাবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করায় কিছুটা স্বস্তি দেখা দিলেও সব এলাকায় সহায়তা না পৌছার অভিযোগ করেছে বানভাসী মানুষ। বন্যা কবলিতদের দ্রæত শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম বলেন,’ব্রহ্মপুত্রের পানি ঘরের চারপাশে আসছে। গবাদিপশু নিয়ে দূঃচিন্তায় আছি।’

বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসার চরের মতিয়ার রহমান জানান, আমার চরের প্রতিটি বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। কেউ নৌকা, কেউ বা মাচান করে উঁচু স্থানে রয়েছেন। এখানকার প্রতিটা পরিবার খুব কষ্টে আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিবুল হাসান জানান, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি আরও ৪৮ ঘন্টা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ব্রহ্মপুত্রের পানি তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যন্য নদ নদীর পানি বিপদসীমা নিচে রয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, এখন পর্যন্ত বানভাসীদের জন্য ৯ উপজেলায় ১৭৩ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লক্ষ টাকা বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মজুত আছে ৬০০ মেট্রিক টন চাল ও ৩০ লাখ টাকা । যা পর্যায়ক্রমে বিতরন করা হবে।