কুড়িগ্রামে বাংলার বৈশাখে নাচ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

বৈশাখের রং লাগাও প্রাণে কর্মসূচির আওতায় ‌’বাংলার বৈশাখ, বাংলার নাচ-১৪৩১’ জাতীয় প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত পর্ব কুড়িগ্রামে শেখ রাসেল অডিটোরিয়ামে সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার চুড়ান্ত পর্ব শেষে শনিবার (১১ মে) বিকেলে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির উদ্যোগে বিজয়ী শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা: হামিদুল হক খন্দকার। উদ্বোধক হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কথা সাহিত্যিক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক।

অনুষ্ঠানে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. রওশন আরা বেগম, একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্য শিল্পী শামীম আরা নিপা, শিবলী মোহাম্মদ, কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত সমাজসেবক অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন, শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজির লিটন প্রমুখ।

জাতীয় পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট জেলার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিভাগের পলাশপুর বিদ্যানিকেতন।

বাংলার বৈশাখ, বাংলার নাচ প্রতিযোগিতায় এবারে প্রাথমিক পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে ময়মনসিংহ বিভাগের ১০৯ নং শেরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। অন্যদিকে ৩য় স্থান অধিকার করেছে বরিশাল বিভাগের জাহানারা ইসরাইল স্কুল এন্ড কলেজ।

বাংলার বৈশাখ, বাংলার নাচ প্রতিযোগিতায় এবারে মাধ্যমিক পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে সিলেট বিভাগের আলী আমজাদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ৩য় স্থান অধিকার করেছে বরিশাল বিভাগের জাহানারা ইসরাইল স্কুল এন্ড কলেজ।

শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া চূড়ান্ত পর্যায় প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর মহাপরিচালক আনজীর লিটন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি শিশুদের জন্য একটা প্লাটফর্ম তৈরি করেছে, যে প্ল্যাটফর্ম শিশুদের মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশে কাজ করে যাবে।

আজকের শিশুরাই একদিন স্মার্ট বাংলাদেশের মূল কারিগর হবে, তাই বিদ্যায় বুদ্ধিতে সাংস্কৃতিক বিকাশের পথ মসৃণ করতেই বাংলাদেশ শিশু একাডেমি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা কুড়িগ্রামে করতে পেরে আমরা আনন্দিত। কারণ কুড়িগ্রামের চমৎকার পরিবেশ আতিথিয়েতা এবং সার্বিক সহযোগিতা পেয়ে আমরা মুগ্ধ। আর কুড়িগ্রাম সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও বেশ সম্মৃদ্ধ এবং প্রতিভাবান শিল্পী রয়েছে।

তিনি আরো জানান, বৈশাখের রং লাগাও প্রাণে, কর্মসূচিটি ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজন করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করা হয়েছে।
এবছরের প্রতিযোগিতাটি দুটি শাখায় বিভক্ত ছিল। ক. প্রাথমিক শাখা (১ম থেকে ৫ম শ্রেণী) খ. মাধ্যমিক শাখা (৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী)।

এই প্রতিযোগিতায় সারাদেশের ৩০৫টি স্কুল অংশগ্রহণ করেছিল। যেখানে মোট অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫২৫ জন। যার মধ্যে মেয়ে ১হাজার ৩৭২ জন এবং ছেলে ১৫৩ জন।

জেলা শহরের প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক দুটি শাখায় প্রথম স্থান অধিকারী স্কুলকে নিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতাটি ২৪ থেকে ২৬শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় পর্যায়ে ১২২টি স্কুল অংশগ্রহণ করেছিল। যেখানে মোট অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ৬১০ জন। এর মধ্যে মেয়ে ৫৮০ জন এবং ছেলে ৩০ জন।

বিভাগীয় পর্যায়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শাখায় বিজয়ী হওয়া ১৬ টি স্কুল চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। যেখানে মেয়ের সংখ্যা ৭৮ জন এবং ছেলে ২ জন।

পরে বিজয়ী শিশু এবং কুড়িগ্রাম শিশু একাডেমি ও বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমির পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এর আগে ৮ বিভাগ থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসা শিশু, অভিভাবক এবং শিশু একাডেমির কর্মকর্তাদের উত্তরবঙ্গ জাদুঘর এবং সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সমাধিস্থল পরিদর্শন করানো হয়।