কুমিল্লার মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার খুন
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করে অবশেষে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হলেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার জাহাঙ্গীর আলম।
মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কার্যক্রমে অংশ নেয়ার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার বাসা থেকে কুমিল্লার মুরাদনগরে আসার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকার ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের অদূরে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
খবর পেয়ে ওই ডেপুটি কমান্ডারের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মুরাদনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান নিহতের পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ডেপুটি কমান্ডার জাহাঙ্গীর আলম দীর্ঘদিন যাবৎ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করে আসছিলেন। ইতোপূর্বে তিনি মুরাদনগর উপজেলার বেশ কিছু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, সচিবালয়সহ কেন্দ্রিয় কমান্ড কাউন্সিলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
গত ১৯ মে শুক্রবার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউপির মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কার্যক্রমে অংশ নিয়ে তিনি ওই ইউনিয়নের বেশ কিছু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রাখায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেলুল কাদেরের সামনেই তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়।
পরে তিনি ৩ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাসহ তাদের সন্তানদের বিরুদ্ধে গত ২২ মে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার ভোরে কুমিল্লার মুরাদনগরের উদ্দেশে তিনি বাসা থেকে বের হওয়ার পর যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকায় দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।
নিহত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে দিদারুল আলম রিপন জানান, গত ১৯ মে তার বাবার উপর পরিকল্পিতভাবে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হামলা করা হয়েছিল। তার বাবা দীর্ঘদিন যাবৎ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম ও প্রতিবাদ করে আসছিল।
সে আরও জানায় বেশ কিছুদিন যাবত মোবাইল ফোনে তার বাবাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে আসছিল দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার তার বাবাকে হত্যার পর তার সঙ্গে থাকা টাকা পয়সা না নিলেও হাতের থাকা ব্যাগটি নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ওই ব্যাগটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালীন বেশ কিছু তথ্য কাগজপত্রসহ ভিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু আমলনামা ছিল।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদা আক্তার জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেলুল কাদের ছুটিতে আছেন। আগামী শনিবার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কার্যক্রমের দিন ধার্য করেছেন।
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আনিছুর রহমান জানান, ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন